পাকিস্তানের হিন্দুদের রক্ষায় বালোচিস্তানের নাগরিকরা

IMG-20250509-WA0248

অপারেশন সিন্দুর-এর প্রতিঘাত সহ্য় করতে না পেরে মুখ থুবড়ে পড়েছে পাকিস্তান। শুধু তাই নয়, পাক সেনার প্রত্যেকটি হামলা দক্ষতার সঙ্গে প্রতিহত করেছে ভারতীয় সেনা। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের বালোচিস্তানে বসবাসকারী হিন্দুদের উপর হামলার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কিন্তু, বালোচিস্তানের নাগরিকরা স্পষ্ট করে দিয়েছেন, সেখানে বসবাসকারী হিন্দুদের গায়ে আঁচড়ও লাগতে দেবেন না তাঁরা।
মুক্ত বালোচ আন্দোলনের সদস্য মীর ইয়ার বালোচ তাঁর এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, বালোচিস্তানে বসবাসকারী হিন্দুদের রক্ষা করতে তাঁরা রয়েছেন।
পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর এমনিতেই বিশ্বে কোণঠাসা পাকিস্তান। তার উপর বালোচিস্তান হাতছাড়া হওয়ার পথে। অবিলম্বে স্বাধীনতা চাইছে বালোচিস্তান। ভারতের সঙ্গে লড়াইয়ে না পেরে সেই বালোচিস্তানে বসবাসকারী হিন্দুদের উপর পাকিস্তান সেনা অত্যাচার শুরু করবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে এক্স হ্যান্ডলে মীর ইয়ার বালোচ লেখেন,’বালোচিস্তানে বসবাসকারী হিন্দুদের আশ্বস্ত করছি, কোনও চিন্তা করবেন না। পাকিস্তান সেনার সন্ত্রাস ও আগ্রাসন থেকে হিংলাজ মাতা মন্দির ও হিন্দুদের রক্ষা করতে আমরা রয়েছি। পাকিস্তানের কাপুরুষ সেনাকে এমন শিক্ষা দিতে পারি যা তাদের সাত পূর্বপুরুষ ভুলবে না।’
ভারত-পাকিস্তানের টানাপোড়েন বাড়ে পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর। গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ের বৈসরনে পর্যটকদের উপর হামলা চালিয়ে ২৬ জনকে হত্যা করে জঙ্গিরা। বেছে বেছে পরিচয় জেনে হামলা হয়। হামলার দায় স্বীকার করে দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামে একটি জঙ্গি সংগঠন। যারা পাকিস্তানের জঙ্গির সংগঠন লস্কর-ই-তৈবার ছায়া সংগঠন। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় পাকিস্তানের প্রত্যক্ষ যোগ রয়েছে বলে স্পষ্ট করে দিয়েছে ভারত। বৃহস্পতিবার ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রি বলেন,’২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে প্রথম হামলা চালায় পাকিস্তান।’
পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার জবাব গত ৭ মে দেয় ভারতীয় সেনা। পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৯টি জায়গায় আঘাত হানে ভারত। গুঁড়িয়ে দেয় একাধিক জঙ্গিঘাঁটি। ভারত অবশ্য স্পষ্ট করে দিয়েছে, ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ পাকিস্তান সেনার কোনও পরিকাঠামোতে আঘাত হানা হয়নি। সাধারণ নাগরিকদের উপরও হামলা হয়নি।
ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’-র পর পাকিস্তান সেনা বিনা প্ররোচনায় সীমান্তে গোলাবর্ষণ করে। এমনকি, সীমান্তবর্তী একাধিক জায়গায় হামলা চালানোর চেষ্টা করে। মিসাইল ছোড়ে। ড্রোন হামলা চালায়। কিন্তু, পাকিস্তান সেনার প্রত্যেকটি হামলা প্রতিহত করেছে ভারতীয় সেনা। বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রি হুঁশিয়ারি দেন,’পাকিস্তান হামলা করলে তার যোগ্য জবাব দেবে ভারত।’ এই পরিস্থিতিতে বালোচিস্তানে হিন্দুদের উপর পাক সেনার অত্যাচারের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তেমন পরিস্থিতি হলে পাক সেনাকে সবক শেখাতে তাঁরা প্রস্তুত বলে হুঙ্কার দিলেন মীর ইয়ার বালোচ। শোনা যাচ্ছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে নাজেহাল অবস্থা পাকিস্তানের। বিদ্রোহ শুরু হয়ে গিয়েছে পাক সেনার অন্দরে। এই আবহে অবিলম্বে স্বাধীনতা চাইছে বালোচিস্তান। আর এই আওয়াজ উঠেছে গত কয়েকদিন ধরেই। বালোচ বিদ্রোহীদের চাপে অস্থির পাক প্রশাসন।  বালোচিস্তানে অস্থির পরিস্থিতির মধ্যে বালোচ বিদ্রোহীরা যে কোনও সময় স্বাধীনতা ঘোষণা করে দিতে পারে বলেও শোনা যাচ্ছে। এক বালোচ বিদ্রোহীর সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে দেখা দাবি করা হয়েছে, তারা দ্রুত স্বাধীনতা দাবি করছেন। ভারতে একটি দূতাবাস খোলার আর্জিও জানাচ্ছেন তাঁরা। এমনকী রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে তাঁদের দাবি ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব বালোচিস্তানের স্বাধীনতা ঘোষণা করতে হবে। বালোচিস্তানে শান্তিরক্ষা বাহিনীর উপস্থিতিও দাবি করছেন তাঁরা। পাকিস্তানের সেনা যাতে অবিলম্বে সরে যায়, সেটাই চান তাঁরা। কীভাবে স্বাধীন বালোচিস্তানের সরকার গঠন করে ক্ষমতা নেওয়া হবে, সেই সব প্ল্যানও তৈরি হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। উল্লেখ্য গত কয়েকদিনে বারবার পাক সেনাকে নিশানা করে হামলা চালাচ্ছে বালোচ বিদ্রোহীরা। বৃহস্পতিবার সকালে পাক সেনার একটি গাড়ি বিস্ফোরণে উড়িয়ে দেয়ছে বালোচ বিদ্রোহীরা।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement