নির্বাচন কমিশনের মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ইসিআইএনইটি

IMG-20250505-WA0282

মোবাইল অ্যাপসের দুনিয়ায় আসছে ইসিআইএনইটি। এতদিন মোট চল্লিশটা মোবাইল এপ্লিকেশন ছিল দেশের জাতীয় নির্বাচন কমিশনের। তবে এবার একটি নতুন মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন লঞ্চ করছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন।এই অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের যাবতীয় নির্বাচন সংক্রান্ত কাজ সম্পন্ন করা যাবে বলে জানা গিয়েছে। নির্বাচন কমিশনের এই নয়া মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন এর নাম হল ইসিআইএনইটি। এটি অতি দ্রুত লঞ্চ করতে চলেছে নির্বাচন কমিশন।কারণ এরপর পুরনো চল্লিশটা অ্যাপ আর থাকবে না। এই অ্যাপের মাধ্যমেই সাধারণ মানুষ অর্থাৎ যারা ভোটার তারা নিজেদের যাবতীয় অ্যাপ্লিকেশন সাবমিট করতে পারবেন। সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলি তাদের অভাব অভিযোগ থেকে নির্বাচন সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য অথবা বিভিন্ন আবেদন করতে পারবেন। নির্বাচন বিধি বা নির্বাচনী প্রক্রিয়া সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য এই অ্যাপ মারফতই পাওয়া যাবে। গত মার্চ মাসে দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে সমস্ত রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকদের যে বৈঠক হয় দিল্লিতে সেখানেই এই নতুন অ্যাপের প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়েছিলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার। শুধুমাত্র ভোটারদেরই নয় নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত সমস্ত স্বীকৃত বা রেজিস্টার্ড রাজনৈতিক দলগুলির কথা ভেবে যাতে মুঠোফোনেই নির্বাচন সংক্রান্ত যাবতীয় নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সুবিধা দেওয়া যায়, সেই পরিকল্পনা নেওয়া হয়। প্রশাসনিক ক্ষেত্রে যেমন সিঙ্গল উইন্ডো সিস্টেম রয়েছে, সেই ধাঁচেই মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল সেই বৈঠকেই। অবশেষে সেই পরিকল্পনা বাস্তব হতে চলেছে। নতুন মোবাইল এপ্লিকেশন হিসেবে এই নয়া অ্যাপস ইতিমধ্যেই পুরোপুরি প্রস্তুত।এখন অপেক্ষা শুধু সবুজ সংকেতের । জানা গিয়েছে, খুব দ্রুত এই অ্যাপ চালু করতে চলেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানানো হয়েছে, নাগরিকদের জন্য নির্বাচনী পরিষেবাকে আরও অনেক সহজ করবে এই ইসিআইএনইটি অ্যাপ্লিকেশন। নির্বাচনী আধিকারিকদের জন্য নির্বিঘ্ন এবং সুবিধাজনক ডেটা হ্যান্ডলিং এর ক্ষেত্রে এটি একটি বড় উদ্যোগ বলেও মনে করছে ভারতের নির্বাচন কমিশন। ভোটারদের এবং অন্যান্য অংশীদারদের যেমন নির্বাচন আধিকারিক , রাজনৈতিক দল এবং নাগরিক সমাজের জন্য একটি নতুন ব্যবহারকারী বান্ধব ডিজিটাল ইন্টারফেস তৈরি করা হয়েছে বলেও দাবি। ইসিআইএনইটি-তে একটি নান্দনিক ব্যবহারকারী ইন্টারফেস বা ইউ থাকবে I একটি সরলীকৃত ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা বা ইউএক্স থাকবে, যা সমস্ত নির্বাচন-সম্পর্কিত কার্যকলাপের জন্য একটি একক প্ল্যাটফর্ম প্রদান করবে। এই পদক্ষেপটি ব্যবহারকারীদের একাধিক অ্যাপ ডাউনলোড এবং নেভিগেট করার এবং বিভিন্ন লগইন মনে রাখার বোঝা কমানোর জন্যও ডিজাইন করা হয়েছে। তথ্য যথাসম্ভব নির্ভুল করার জন্য, ইসিআইএনইটি-তে কেবলমাত্র অনুমোদিত ইসিআই আধিকারিকদের দ্বারা তথ্য প্রবেশ করানো হবে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার দ্বারা প্রবেশ করা নিশ্চিত করবে যে স্টেক হোল্ডারদের জন্য উপলব্ধ তথ্য যথাসম্ভব নির্ভুল। তবে, কোনও বিরোধের ক্ষেত্রে, যথাযথভাবে পূরণ করা প্রাথমিক তথ্যই প্রাধান্য পাবে।ইসিআইএনইটি ভোটার হেল্পলাইন অ্যাপ, ভোটার টার্নআউট অ্যাপ, সিভিআইজিআইএল, সুবিধা ২.০, ইএসএমএস, সক্ষম এবং কেওয়াইসি অ্যাপের মতো বিদ্যমান অ্যাপগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করবে, যেগুলি একসাথে ৫.৫ কোটিরও বেশি ডাউনলোড হয়েছে। ইসিআইএনইটি প্রায় ১০০ কোটি ভোটার এবং সমগ্র নির্বাচনী ব্যবস্থাকে উপকৃত করবে বলে আশা করা হচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে ১০.৫ লক্ষেরও বেশি বুথ লেভেল অফিসার বা বিএলও, রাজনৈতিক দলগুলি দ্বারা নিযুক্ত প্রায় ১৫ লক্ষ বুথ লেভেল এজেন্ট বা বিএলএ, প্রায় ৪৫ লক্ষ পোলিং অফিসার, ১৫,৫৯৭ জন সহকারী নির্বাচনী নিবন্ধন কর্মকর্তা বা এইআরও, ৪১২৩ জন ইআরও এবং ৭৬৭ জন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বা ডিইও। সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৩৬ জন সিইও, ৭৬৭ জন ডিইও এবং গোটা দেশের ৪,১২৩ জন ইআরও-এর অংশগ্রহণে একটি বিস্তৃত পরামর্শমূলক অনুশীলনের পর এবং কমিশনের মাধ্যমে জারি করা ৯,০০০ পৃষ্ঠার নির্বাচনী কাঠামো, নির্দেশাবলী এবং হ্যান্ডবুক সমন্বিত ৭৬টি প্রকাশনা পর্যালোচনা করার পর ইসিআইএনইটি তৈরি করা হচ্ছে। ইসিআইএনইটি’র মাধ্যমে প্রদত্ত তথ্য জনপ্রতিনিধিত্ব আইন ১৯৫০, ১৯৫১, নির্বাচনী বিধি নিবন্ধন, ১৯৬০ নির্বাচনী বিধি আচরণ, ১৯৬১ এবং সময়ে সময়ে ইসিআই কর্তৃক জারি করা নির্দেশাবলী দ্বারা প্রতিষ্ঠিত আইনি কাঠামোর মধ্যে কঠোরভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে নয়া এই অ্যাপ্লিকেশন, এমনটাই মনে করছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement