গত কয়েক মাস ধরেই কলকাতা সহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় একের পর এক উদ্ধার হচ্ছে জাল ওষুধ৷ বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে ইতিমধ্যেই অনেক সূত্র হাতে এসেছে তদন্তকারীদের হাতে। এদিকে ঘটনার তদন্তে নেমে জানা যায়, অনেকক্ষেত্রেই উত্তরপ্রদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গে ঢুকত এই জাল ওষুধ। তবে সেই সূত্র ধরে তদন্ত এগোতে উত্তরপ্রদেশ সরকার তেমন কোনও সাহায্য করছে না বলেও অভিযোগ রাজ্য সরকারের। এই প্রসঙ্গে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, জাল ওষুধের তদন্তে টালবাহানা করছে উত্তরপ্রদেশ সরকার।
রাজ্যের তরফ থেকে এও জানানো হয়, একের পর এক জাল ওষুধ উদ্ধার হওয়ার পর উত্তরপ্রদেশের একাধিক জায়গার যোগসূত্র মিলেছে। কারণ, তদন্তে উঠে এসেছে উত্তরপ্রদেশের একাধিক সংস্থার হদিস। উত্তরপ্রদেশে একাধিক সংস্থা থেকে জাল ওষুধ পাঠানো হচ্ছিল কলকাতায় বলে তদন্তে উঠে আসে। তারপরেই তদন্তের জন্য কিছু তথ্য চেয়ে উত্তরপ্রদেশ সরকারকে চিঠি দেয় রাজ্য। যেখানে উত্তরপ্রদেশ থেকে কিছু সংস্থার ব্যাপারে জাল ওষুধ নিয়ে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছিল। এর পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশ সরকারের থেকে জাল ওষুধের তদন্তে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির লাইসেন্স বাতিল, ওষুধের নমুনা পরীক্ষা সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রিপোর্ট চেয়েছিল রাজ্য। কিন্তু, উত্তরপ্রদেশ সরকারের তরফে সেই চিঠির উত্তরে পাঠানো চিঠিতে রাজ্য অসন্তুষ্ট।কিন্তু তার উত্তরে রয়ে গিয়েছে একাধিক ধোঁয়াশা। সূত্রের খবর, প্রয়োজনীয় তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কোনও নির্দিষ্ট তথ্য নেই উত্তরপ্রদেশের সরকারের তরফে পাঠানো চিঠিতে।
তবে উত্তরপ্রদেশের চিঠিতে সন্তুষ্ট না হয়ে ফের বিস্তারিত তথ্য চেয়ে রাজ্য চিঠি পাঠাবে বলে জানা গিয়েছে। জাল ওষুধের তদন্তে উত্তরপ্রদেশের যে সংস্থাগুলির নাম উঠে এসেছে ও যে যে জায়গা থেকে জাল ওষুধ পাঠানো হচ্ছে তার বিস্তারিত তথ্য চেয়ে ফের চিঠি দিচ্ছে রাজ্য বলেই নবান্ন সূত্রে খবর।
এরই মাঝে জাল ওষুধের তদন্ত করতে গিয়ে ধরা পড়ল আরও জাল ওষুধ। এবার ইউরিম্যাক্স-ডি নামক ওষুধ জাল করে বিক্রি করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ। সূত্রের খবর, উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহ থেকে প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা মূল্যের এই জাল ওষুধ উদ্ধার করেছেন ড্রাগ কন্ট্রোলের অফিসাররা। জানা গিয়েছে, বাইরের রাজ্য থেকে জাল ওষুধ এনে এ রাজ্যের সংস্থা মারফত সেই জাল ওষুধ কলকাতায় বিক্রি করা হচ্ছিল বলেই সূত্রে খবর। সম্প্রতি হাওড়ার আমতা থেকেও জাল ওষুধ ধরেছিলেন রাজ্যের ড্রাগ কন্ট্রোলের অফিসাররা। হাওড়ার আমতার জাল ওষুধের তদন্ত করতে গিয়েই সূত্র মেলে উত্তর ২৪ পরগনার খড়দার৷ তারপরে সেখানেও অভিযান চালানো হয় ড্রাগ কন্ট্রোলের তরফে৷ দেখা যায় সেখানেও বিক্রি করা হচ্ছে জাল ওষুধ। উত্তর ২৪ পরগনার খড়দায় এক সংস্থার অফিসে হানা দিয়ে নির্দিষ্ট ব্যাচ নম্বরের সব ওষুধ বাজেয়াপ্ত করেন রাজ্যের ড্রাগ কন্ট্রোল এর অফিসাররা। ওই সংস্থার গোডাউনও সিল করা হয়েছে বলে রাজ্যের ড্রাগ কন্ট্রোলের তরফে বলেই সূত্রের খবর।
গত কয়েক দিন ধরেই জাল ওষুধের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছিল রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল৷ মোটা টাকা ডিসকাউন্টের আড়ালে সাধারণ মানুষকে জাল ওষুধও বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছিল৷ সম্প্রতি এই বিষয়টি নিয়ে নবান্নে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকও নবান্নে। মুখ্যসচিব জানিয়েছিলেন, রাজ্যজুড়ে জাল ওষুধ কারবারিদের বিরুদ্ধে এই অভিযান চলবে৷