জাতিভিত্তিক জনগণনা কেন্দ্রের

IMG-20250501-WA0004

জাতি গণনার দাবি জানিয়ে আসছিলেন বিরোধীরা। এবার সেই দাবি মেনে নিয়েই জাতিগণনায় সায় দিল নরেন্দ্র মোদীর সরকার।বুধবার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার রাজনৈতিক কমিটি। জাতিগণনা দেশের আগামী জনগণনার অংশ হতে চলেছে বলে জানানো হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ইতিহাসে এই ঘোষণা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। তবে জাতগণনা সংক্রান্ত তথ্য আলাদা করে প্রকাশ করা হবে না। আগামী জনগণনার সঙ্গেই এই সংক্রান্ত তথ্য সংযোজিত হবে। বুধবার এমনটাই জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় রেল এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। রাজনৈতিক বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকের পর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেন, “রাজনৈতিক বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটি আজ সিদ্ধান্ত নিয়েছে আগামী জনগণনার সঙ্গে জাতিগণনার তথ্যও যুক্ত করা উচিত।” অশ্বিনীর বক্তব্য, কিছু রাজ্য জাতগত তথ্যসংগ্রহের জন্য সমীক্ষার ব্যবস্থা করেছে। সে ক্ষেত্রে সব রাজ্যে পদ্ধতি সঠিক ছিল না বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় সরকার। অশ্বিনীর দাবি, কিছু রাজ্য এই সমীক্ষা ভাল ভাবে করলেও বাকি রাজ্যগুলির সমীক্ষায় অস্বচ্ছতা এবং রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ রয়ে গিয়েছে। এর ফলে সমীক্ষাগুলি ঘিরে সমাজে বেশ কিছু ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। রাজনীতির কারণে যাতে সমাজের শৃঙ্খলায় কোনও প্রভাব না-পড়ে সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দাবি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর। তিনি জানান, সেই কারণেই জাত সংক্রান্ত তথ্যের জন্য সমীক্ষার বদলে গণনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২০২১ সালেই জনগণনা হওয়ার কথা ছিল। সেই সময় কোভিড-১৯ মহামারি চলায় জনগণনা পিছিয়ে গিয়েছিল। গত লোকসভা নির্বাচনেরও আগে থেকে জাতিভিত্তিক জনগণনা চেয়ে কেন্দ্রকে ধারাবাহিক ভাবে আক্রমণ করে চলেছেন রাহুল গান্ধী। বারংবার তিনি কেন্দ্রকে জাতিভিত্তিক জনগণনার ফল প্রকাশের জন্য চাপ দিয়েছেন। পাশাপাশি, জাতিভিত্তিক জনগণনা হয়েছে বিহারে, যখন কংগ্রেস এবং আরজেডি বিহার সরকারের অংশ ছিল। সম্প্রতি কর্নাটকের কংগ্রেস সরকারও জাতিভিত্তিক জনগণনা করছে।যদিও রাজ্যে রাজ্যে পরিচালিত এই জাতিভিত্তিক জনগণনাগুলি ‘অবৈজ্ঞানিক’ বলে দাবি করেছেন অশ্বিনী বৈষ্ণব। কংগ্রেস এবং ইন্ডিয়া জোটের অন্য দলগুলি জাতিভিত্তিক জনগণনাকে শুধুমাত্র ‘রাজনৈতিক হাতিয়ার’ হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। আলাদা ভাবে জাতিভিত্তিক জনগণনার পরিবর্তে মূল জাতীয় জনগণনার মধ্যেই একটি সঠিক জাতিভিত্তিক জনগণনা অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে জানিয়েছেন তিনি।অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেছেন, ‘কিছু রাজ্য জাতিভিত্তিক জনগণনা করেছে। কিছু রাজ্য এটি ভালো ভাবে করেছে। অন্যরা কেবল রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে অস্বচ্ছ উপায়ে এই ধরণের সমীক্ষা করেছে। এই ধরণের সমীক্ষা সমাজে সন্দেহের বাতাবরণ তৈরি করে। রাজনীতির দ্বারা আমাদের সামাজিক কাঠামো যাতে বিঘ্নিত না হয় তা নিশ্চিত করতে সমীক্ষার পরিবর্তে জাতিভিত্তিক জনগণনাকে জাতীয় জনগণনার অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।’ রাহুল গান্ধী জাতি গণনার কথা বারবার বললেও এদিন অশ্বিনী বৈষ্ণব দাবি করেন, “কংগ্রেস সরকার বরাবর জাতি গণনার বিরোধিতা ক’রে আসছে। ২০১০ সালে মনমোহন সিং বলেছিলেন জাতি গণনার বিষয়টি মন্ত্রিসভায় বিবেচনা করা উচিত। এই বিষয়ে বিবেচনা করার জন্য মন্ত্রীদের একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছিল। অধিকাংশ রাজনৈতিক দলই জাতি গণনা সুপারিশ করে। যদিও কংগ্রেস সরকার জাতি গণনা করায়নি, কেবল মাত্র জাতি সমীক্ষা করায়।”অশ্বিনী দাবি করেন, “এটা স্পষ্ট যে কংগ্রেস এবং ‘ইন্ডিয়া’ জোটের শরিকরা জাতি গণনাকে শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। কিছু রাজ্য জাতি সমীক্ষা চালাচ্ছে। কিছু রাজ্য কাজটা ভালোভাবেই করেছে। আবার কিছু রাজ্য কেবল রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে অস্বচ্ছভাবে এই ধরনের জরিপ পরিচালনা করেছে।” ১৯৪৭ সাল থেকে একবারও জাতিভিত্তিক জনগণনা না করার জন্য পূর্ববর্তী কংগ্রেস সরকারগুলির সমালোচনা করেছেন তিনি। দাবি করেছেন, আজ কংগ্রেস জাতিভিত্তিক জনগণনার দাবি করলেও, ধারাবাহিক ভাবে তারা এর বিরোধিতা করে এসেছে।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement