সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণর জামিন

IMG-20250501-WA0002

অবশেষে জামিন পেলেন বাংলাদেশে গ্রেফতার হওয়া ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় প্রভু। দীর্ঘ পাঁচ মাস পর বুধবার ঢাকার উচ্চ আদালত তাঁর জামিন মঞ্জুর করে। রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গত ২৫ নভেম্বর চিন্ময়কৃষ্ণকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে জেলে রয়েছেন তিনি। বুধবার বাংলাদেশের আদালত তাঁর জামিন মঞ্জুর করে। তবে এখনই সন্ন্যাসীর মুক্তি হবে কি না, তা নিয়ে জটিলতা রয়েছে বলে আইনজীবী মহল সূত্রে খবর। তাই জামিন মিললেও কবে জেলের বাইরে আসতে পারবেন বাংলাদেশের সম্মিলিত সনাতনী জাগরণী জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী, তা এখনও অজানা। তবে আপাতত তাঁর জামিনের খবরেই উচ্ছ্বসিত সে দেশের সনাতন হিন্দু সমাজ। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ডেইলি স্টারকে আইনজীবী প্রহ্লাদ দেবনাথ জানিয়েছেন, হাই কোর্টের এই নির্দেশের পর চিন্ময়কৃষ্ণের জেলমুক্তি হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে যদি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ হাই কোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ দেয়, তবে জেল থেকে এখনই তিনি ছাড়া পাবেন না।বাংলাদেশের হাই কোর্টে চিন্ময়কৃষ্ণের জামিনের আবেদনের শুনানি ছিল বুধবার। শুনানি শেষে বিচারপতি আতোয়ার রহমান খান এবং আলি রেজার যৌথ বেঞ্চ আবেদনটি মঞ্জুর করে। ২০২৪ সালের নভেম্বরে পতাকা অবমাননার অভিযোগে দেশদ্রোহিতার মামলা দায়ের হয় চিন্ময় প্রভুর বিরুদ্ধে। তাঁকে চট্টগ্রামের কারাগারে বন্দি করা হয়। একাধিকবার চট্টগ্রামের নিম্ন আদালতে জামিনের আবেদন খারিজ হয়। এমনকী শুনানির আগে তাঁর আইনজীবীদের উপর হামলাও হয়। পরে ঢাকা হাই কোর্টেও জামিন খারিজ করে দেয়। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুরা অভিযোগ তোলেন, হিন্দু সন্ন্যাসী বলেই ইউনুস সরকারের কোপে পড়েছেন চিন্ময় প্রভু। সেই কারণেই জামিন নিয়ে অযথা এত জটিলতা। এর প্রতিবাদে পথেও নামে হিন্দু সমাজ। শুধু ওদেশেই নয়, এপার বাংলাতেও চিন্ময় প্রভুর জামিন চেয়ে পোস্টার হাতে প্রতিবাদ মিছিল হয়। গত ৪ ফেব্রুয়ারি চিন্ময়কৃষ্ণের মামলায় রুল জারি করেছিল আদালত। কেন তাঁকে জামিন দেওয়া হবে না, আদালত জানতে চেয়েছিল। এই সংক্রান্ত শুনানি হওয়ার কথা ছিল ২৩ এপ্রিল। কিন্তু সে দিন আদালত জানায়, ৩০ এপ্রিল শুনানি হবে। অবশেষে বুধবার শুনানি শেষ হয়েছে। উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে আদালত চিন্ময়কৃষ্ণের জামিন মঞ্জুর করেছে।চিন্ময়কৃষ্ণের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল চট্টগ্রামে। তাঁর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগ ছিল। রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করে বাংলাদেশের পুলিশ। তার পর থেকে একাধিক বার তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছিল হাই কোর্টে। শুনানির দিন তাঁর পক্ষে আইনজীবী আদালতে হাজির হতেও পারেননি। আইনজীবীদের ভয় দেখানোর অভিযোগ উঠেছিল। চিন্ময়কৃষ্ণের জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ার পর চট্টগ্রামের আদালতচত্বরে বিস্তর অশান্তি হয়েছিল। অভিযোগ, এক জনের মৃত্যুও হয় ওই অশান্তিতে। গত বছর বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতন হয়। তার পর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে। তারাই এখন বাংলাদেশের ক্ষমতায় রয়েছে। অভিযোগ, হাসিনা দেশ ছাড়ার পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার বেড়ে গিয়েছে। বার বার দেশের নানা প্রান্ত থেকে এই সংক্রান্ত অশান্তির খবর এসেছে। তার মাঝেই সংখ্যালঘু সন্ন্যাসীর গ্রেফতারি যেন আগুনে ঘি ঢেলেছিল। বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা চিন্ময়কৃষ্ণের মুক্তির দাবিতে পথে নেমেছিলেন। পাঁচ মাস পরে অবশেষে তিনি জামিন পেলেন।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement