জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের দু’দিন আগেই দিঘায় পৌঁছলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কাল বুধবার জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন। তার আগে সোমবারই দিঘায় পৌঁছে যান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি এ দিন ঘুরে দেখেন নবনির্মিত জগন্নাথ মন্দির চত্বর। কথা বলেন মন্দিরের পুরোহিতদের সঙ্গে।
সোমবার হাওড়ার ডুমুরজলা হেলিপ্যাড থেকে হেলিকপ্টারে দিঘায় যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হাওড়া থেকে সম্প্রীতি, ঐক্য এবং শান্তি বজায় রাখার বার্তা দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিঘায় পৌঁছে তিনি বলেন, ‘পরশু ঠাকুর প্রতিস্থাপন।দ্বারোদঘাটন হবে আড়াইটে থেকে তিনটের মধ্যে। তারপর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে।’ মন্দিরের স্থাপত্যের প্রশংসাও শোনা যায় তাঁর মুখে। বুধবার, অক্ষয় তৃতীয়ায় দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে প্রাণ প্রতিষ্ঠা হবে বলে জানা গিয়েছে। উদ্বোধনের আগে আজ মঙ্গলবার সেখানে ষজ্ঞ হবে। তাতে অংশ নেবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
রবিবার বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে পুরীর নিয়মে দিঘায় জগন্নাথ দেবের প্রাণপ্রতিষ্ঠার আচার অনুষ্ঠান শুরু হয়। জগন্নাথদেবের মূল মন্দিরের সামনে হোমযজ্ঞ করার জন্য তৈরি অস্থায়ী আটচালা ঘর। সেখানেই দু’বেলা পুজো এবং হোমযজ্ঞ চলছে। পুরীর মন্দির থেকে ৫৭ জন জগন্নাথদেবের সেবক এবং ইসকন থেকে ১৭ জন সাধু এসেছেন। ১০০ কুইন্টাল আম ও বেলকাঠ এবং ২ কুইন্টাল ঘি পোড়ানো হবে মহাযজ্ঞে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দিঘায় সমুদ্র রয়েছে। এখানে বহু মানুষ বেড়াতে আসেন। দিঘায় একটা তীর্থস্থান হলে তা লোকজনদের আকৃষ্ট করবে।দিঘায় যে জগন্নাথধাম তৈরি হয়েছে তা নতুন কৃষ্টি, সংস্কৃতি। এই মন্দিরে অধ্যাত্মবাদ এবং সম্প্রীতির মিলন হয়েছে।’ দিঘা আন্তর্জাতিক পর্যটন মানচিত্রে জায়গা করে নিতে চলেছে, আশাবাদী মমতা। উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে বিভিন্ন উপাচার শুরু হয়েছে। জগন্নাথদেবের বসার জন্য পিঁড়ির পুজো শেষ হয়ে গিয়েছে। মঙ্গলবার হবে মহাযজ্ঞ। এ দিকে এই অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে কড়া নিরাপত্তার চাদরে মোড়া রয়েছে দিঘা। ক্রমাগত চালানো হচ্ছে কড়া নজরদারি।উল্লেখ্য, দিঘার জগন্নাথ মন্দির রাজস্থানের গোলাপি বেলেপাথর দিয়ে তৈরি। অন্তত ৮০০ কারিগর দিঘায় আসেন মন্দির নির্মাণের কাজে। তাঁরা সকলেই রাজস্থানের বাসিন্দা। মন্দিরের প্রধান দ্বার দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করলেই প্রথমে পড়বে তিনটি দীপস্তম্ভ। পুরীর মতো দিঘার মূল মন্দিরে প্রবেশের জন্য রয়েছে চারটি দ্বার। একইভাবে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের সিংহদ্বার বা মন্দিরের প্রবেশদ্বারের সামনে রয়েছে কালো রঙের অরুণ স্তম্ভ। দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের প্রবেশ দ্বারের সামনে কালো পাথরে তৈরি ৩৪ ফুট লম্বা ১৮ মুখী অরুণ স্তম্ভ তৈরি করা হয়েছে। আর এই স্তম্ভের মাথায় রয়েছে অরুণা মূর্তি।