সুন্দরবন: বৈশাখী গরম চড়তে শুরু করলে বাজারে দেখা মেলে তালের পাটালি। শীতে খেজুর গুড়ের পাটালির মতো এত বহুলভাবে মেলে না যদিও। তবু অনেকের কাছে গরম কাল অপেক্ষার শুধু তাল পাটালির জন্যই। বলা হয় তালপাটালি যত সাদা আর নরম হবে ততই তার স্বাদ। দক্ষিণ ২৪ পরগণাতেও তালপাটালির বহুল চল আছে গ্রামাঞ্চলে চৈত্র-বৈশাখ মাসে তাল গাছ কেটে তালের রস সংগ্রহ করা হয়। তা বিশেষ পদ্ধতিতে দীর্ঘ সময় ধরে পাটালি তৈরি করা হয়।তাল পাটালির জন্য বিখ্যাত। তাল পাটালি তৈরী করা বেশ শ্রম সাধ্য কাজ। তবে এটি তৈরি করতে প্রচন্ড সময় সাপেক্ষ এবং প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়। সারাদিনে একটি তালগাছ কে তিন বার গাছে উঠতে হয়-তারপর সেই গাছ ভালো করে মলম দিতে হয় পরে ছাড়িয়ে তাল গাছের ডগা কেটে সেই গাছে হাড়ি ঝুলিয়ে তালের রস সংগ্রহ করতে হয়। তারপর সেই রস গাছ থেকে নামিয়ে উনানে আগুন দিয়ে জাল দিয়ে যখন গুর দানা হয়ে আসবে তারপর তালের একটি ডেগ দিয়ে সেটাকে হাতের সাহায্যে ভালো করে নাড়তে হবে যাতে গুর বসে না যায়। তারপর ওই রস চিট হয়ে গেলে যেকোনো কাপড় বা বস্তার উপরে ফেলে দিতে হবে জান আপনার যেকোনো ডিজাইন করতে পারেন। তারপর একটু ঠান্ডা হলে ছুরি বা অন্য কোন ধারালো কিছু দিয়ে বিভিন্ন সাইজের কেটে নিতে হবে। তাল পাটালি দিয়ে পরোটা আর গরম রুটি দুই খেতে বেজায় ভাল। কিন্তু এই চমৎকার বস্তু সবচেয়ে বেশি স্বস্তি দেয় হিমশীতল জলের সঙ্গে। সে জল যদি গৃহস্থের কুঁজো থেকে আসে তাহলে কথাই নেই। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকায় চৈত্র মাসের শেষে এবং বৈশাখের শুরুতে তাল গাছের রস দিয়ে বিভিন্ন পদ্ধতিতে তালের গুড় তৈরি করে শিউলিরা যা খুব প্রসিদ্ধ এবং খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু।