পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া মনোভাব নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। আগেই একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে পাকিস্তানকে কোণঠাসা করতে।এবার সব রাজ্য থেকে পাকিস্তানিদের চিহ্নিত করে সেদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রীদের নির্দেশ দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ইতিমধ্যেই পাকিস্তানিদের ভারত ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। বাতিল হয়েছে পাকিস্তানিদের ভিসাও। শুক্রবার সকালে মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন অমিত শাহ। সেখানেই তিনি জানান যে, সংশ্লিষ্ট রাজ্যে কোনও পাকিস্তানের নাগরিক আছেন কি না, তা খতিয়ে দেখতে হবে। যদি কেউ থেকে থাকেন, তবে তাঁকে শনাক্ত করতে হবে এবং পাকিস্তানে ফেরত পাঠাতে হবে। যদিও মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে শাহের এই কথোপকথনের বিষয়ে কেন্দ্র বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু জানানো হয়নি। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চলছে টানাপোড়েন। নয়াদিল্লির তরফে হামলার পরদিনই ঘোষণা করা হয়েছে, পাকিস্তানিদের ভারতে প্রবেশ নিষিদ্ধ। ভারতে বর্তমানে যেসমস্ত পাকিস্তানিরা রয়েছেন, তাঁদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়তে। সেই সঙ্গে ঘোষণা করে দেওয়া হয়, আগামী দিনে আর কোনও পাক নাগরিক ভারতের ভিসা পাবে না। এমনকী সার্ক দেশভুক্ত দেশগুলিকে যে বিশেষ ‘এসভিইএস’ ভিসা দেওয়া হয় সেটাও বাতিল করা হবে। পাক নাগরিকদের মধ্যে যারা মেডিক্যাল ভিসায় এ দেশে রয়েছেন, আগামী ২৯ এপ্রিলের মধ্যে দেশ ছাড়তে হবে তাঁদেরও।পাক নাগরিকদের দেশ ছাড়ার সময়সীমা ইতিমধ্যেই শেষ হয়ে গিয়েছে। সূত্রের খবর, সময়সীমা শেষ হওয়ার পরেই সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন অমিত শাহ। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, প্রত্যেক রাজ্য খুঁজে দেখতে হবে কতজন পাকিস্তানি রয়েছেন। তাঁদের দ্রুত ফেরত পাঠাতে হবে। মঙ্গলবার জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিদের গুলিতে মৃত্যু হয় ২৫ জন পর্যটক-সহ মোট ২৬ জনের। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানের দিকেই আঙুল তুলেছে। কেবল তা-ই নয়, নিজেদের দাবির সপক্ষে কিছু তথ্যপ্রমাণও আমেরিকা, ব্রিটেনের কূটনীতিকদের দেখিয়েছেন ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী।পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক পদক্ষেপ করে নয়াদিল্লি জানিয়ে দিয়েছে, সে দেশের নাগরিকদের ভিসা দেওয়া বন্ধ রাখা হচ্ছে। আগে দেওয়া ভিসাও বাতিল করার কথা জানিয়েছে ভারত। ভারত স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে, যে পাকিস্তানিরা বর্তমানে ভারতে রয়েছেন, তাঁদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়তে হবে। এই আবহেই এ বার বিভিন্ন রাজ্যে থাকা পাকিস্তানিদের খুঁজে তাঁদের দেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দিলেন শাহ। গত মঙ্গলবার জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিদের হত্যালীলায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ২৫ জনই পর্যটক এবং এক জন স্থানীয় বাসিন্দা। ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তানি জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-এ-ত্যায়বার ছায়া সংগঠন ‘দ্য রেজ়িস্ট্যান্স ফোর্স’। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, ওই হামলায় পাকিস্তান থেকে আসা জঙ্গিরা জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছেন গোয়েন্দারা। মঙ্গলবারের ওই হত্যাকাণ্ডের পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ পদক্ষেপ করেছে ভারত। স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে সিন্ধু জলচুক্তি। অটারী সীমান্তে ভারতের ‘ইন্টিগ্রেটেড চেক পোস্ট’ বন্ধও করে দেওয়া হয়েছে। জম্মুর সুচেতগড়ে ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত সাধারণ মানুষের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক পদক্ষেপ করে নয়াদিল্লি জানিয়ে দিয়েছে, সে দেশের নাগরিকদের ভিসা দেওয়া বন্ধ রাখা হচ্ছে। আগে দেওয়া ভিসাও বাতিল করার কথা জানিয়েছে ভারত। ভারত স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে, যে পাকিস্তানিরা বর্তমানে ভারতে রয়েছেন, তাঁদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়তে হবে। সেই আবহেই এ বার সুচেতগড়ে ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত সাধারণ মানুষের জন্য বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল বিএসএফ। ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) জানিয়েছে, সুচেতগড়ের অকট্রয় পোস্ট দিয়ে কোনও সাধারণ মানুষ যাতায়াত করতে পারবেন না! পহেলগাঁও কাণ্ডের পরই বিএসএফ সীমান্তে নজরদারি আরও জোরদার করেছে। বৃহস্পতিবারই বিএসএফের তরফে জানানো হয়, পঞ্জাবের অটারী-ওয়াঘা সীমান্তে ‘বিটিং রিট্রিট’ অনুষ্ঠানে বদল আনছে তারা। অনেকের মতে, শান্তি এবং উস্কানি যে এক সঙ্গে চলতে পারে না, ইসলামাবাদকে তারই বার্তা দিল নয়াদিল্লি।