এসএসসি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায় বেরনোর পর গত সোমবার যোগ্য-অযোগ্য তালিকা প্রকাশ করার কথা বলেছিল এসএসসি। সেই কারণেই এসএসসি দফতরের সামনে ভিড় জমিয়েছিলেন চাকরিহারারা। কিন্তু সেদিন কোনও তালিকা বের করা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে ক্ষোভ উগরে দিয়ে এসএসসি ভবন চত্বরেই ধর্না শুরু করেন চাকরিহারারা। কার্যত নিজের অফিসেই বন্দি করে রাখা হয় এসএসসি চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারকে। এর ২ দিন পর বুধবার সকালে ঘেরাও মুক্ত হন তিনি। পুলিশি ঘেরাটোপে তাঁকে এসএসসি ভবন থেকে বের করে আনা হয়। ব্রাত্য এও জানিয়েছিলেন, বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে চাকরিহারাদেরই এক মামলার শুনানি রয়েছে। তাতে সশরীরে হাজির থাকার কথা এসএসসি চেয়ারম্যানের। তাঁকে না ছাড়া হলে আদালত অবমাননা হতে পারে। দেখা গেল, বুধবার সকালেই ঘেরাও মুক্ত হলেন তিনি। এই বিষয়ে চাকরিহারাদের বক্তব্য, মামলার শুনানির জন্যই তাঁকে ছাড়া হয়েছে, নাহলে ক্ষতি হতে পারে তাঁদেরই। তবে ধর্না থেকে সরছেন না তাঁরা। তালিকা যতক্ষণ না প্রকাশ করা হচ্ছে, ততক্ষণ ধর্না চালিয়ে যাবেন।
চাকরিহারারা এও বলেছেন, শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন কোনও তালিকা প্রকাশ করা হবে না। এই বিষয়টি তাঁর সঙ্গেই বুঝে নেবেন তাঁরা। কিন্তু এসএসসি চেয়ারম্যানকে আটকে রেখে নিজেদের ক্ষতি বাড়াতে পারবেন না তাঁরা। আদালতের শুনানিতে তাঁর থাকা অত্যন্ত জরুরি। তাই শর্তসাপেক্ষে তাঁকে ছাড়া হয়েছে। কিন্তু অবস্থান কোনও ভাবেই তুলবেন না কেউ। তাঁদের মূল দাবি, ২২ লক্ষ ওএমআর সিট প্রকাশ করতেই হবে।
এর আগে সোমবার এসএসসি-র সঙ্গে একপ্রস্থ বৈঠক করেছিল চাকরিহারাদের প্রতিনিধি দল। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি। বরং বিক্ষোভ আরও বাড়তে থাকে এবং ঘেরাও করে রাখা হয় এসএসসি চেয়ারম্যানকে। এমনকী তাঁদের জন্য খাবার, জল নিয়ে যেতে দেওয়া হয়নি বলেও দাবি করে পুলিশ। মঙ্গলবারই পরিস্থিতি খুব একটা বদলায়নি। চাকরিহারাদের ধর্না যেমন চলেছে, তেমনই ‘বন্দি’ ছিলেন সিদ্ধার্থ মজুমদার। যদিও শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সাংবাদিক বৈঠক করে চাকরিহারাদের আশ্বাস দেন যে, তাঁরা তাঁদের কাজ করছেন আইনি পরামর্শ মেনে। শিক্ষকরাও যেন শান্ত হন এবং নিজের নিজের কাজে যোগ দেন।
এরপর মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে ব্রাত্য বলেছিলেন, আইনি পরামর্শ মেনেই কোনও তালিকা প্রকাশ করা হবে না। তবে ২৬ হাজার জন্যের মধ্যে ১৭,২০৬ জনকে অযোগ্য তালিকার বাইরে রাখা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন শিক্ষামন্ত্রী। পরে অবশ্য শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যেই এ নিয়ে আরও ধোঁয়াশা তৈরি হয়। ধন্দ এড়াতে পরে এসএসসির চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার বলেন, এই ১৭,২০৬ জনের মধ্যে কারা অযোগ্য সেই তালিকা প্রস্তুত করবে এসএসসি। শীঘ্রই সেই তালিকা পাঠিয়ে দেওয়া হবে স্কুল শিক্ষা দফতরে। যা মঙ্গলবার বিকেলেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রে খবর।