মাস্কের সঙ্গে ফোনে কথা মোদীর

IMG-20250418-WA0251

মার্কিন ধনকুবের এলন মাস্কের সঙ্গে ফোনে কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এক্স হ্যান্ডলে শুক্রবার নিজেই সেকথা জানান মোদী। গত ফেব্রুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী আমেরিকা সফরের সময় ওয়াশিংটনে বৈঠক হয়েছিল দু’জনের। কথা হয়েছিল নানা বিষয়ে। এবার ফোনে বিবিধ বিষয়ে এলন মাস্কের সঙ্গে কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জানা গিয়েছে, মোদী এবং মাস্কের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে। তালিকায় ছিল ভারতে দ্রুত বিকশিত টেক ইকোসিস্টেম। চলতি বছরের শুরুতে মোদীর আমেরিকা সফরের সময়ে ওয়াশিংটনে দু’জনের সাক্ষাতের কথা মনে করান মাস্ক। ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তিগত সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার বার্তা নিয়েই শুক্রবার ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন টেসলার কর্তা। ফোনালাপ নিয়ে মোদী এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘এলন মাস্কের সঙ্গে কথা হয়েছে। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছি আমার। এর মধ্যে এই বছরের শুরুতে ওয়াশিংটন ডিসিতে আমাদের বৈঠকে আলোচিত বিষয়গুলিও রয়েছে। আমরা প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিরাট সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছি। ভারত এই ক্ষেত্রগুলিতে আমেরিকার সাথে অংশীদারিত্বকে এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ উল্লেখ্য, চলতি বছরের শুরুতে আমেরিকা সফরের সময় ওয়াশিংটনে মাস্কের সঙ্গে বৈঠক করেন মোদী।ট্রাম্প দ্বিতীয় বার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই আমেরিকার সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্কও আরও জোরদার করতে উদ্যোগী মোদী সরকার। সেই আবহেই আমেরিকা গিয়েছিলেন মোদী। ট্রাম্পের সঙ্গে একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় তাঁর। শুধু তা-ই নয়, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তিও অগ্রাধিকার পায়। তবে সেই আবহেই ট্রাম্পের শুল্কনীতির কোপে পড়ে ভারতও। প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরই ট্রাম্প ঘোষণা করেন, যে দেশ আমেরিকান পণ্যের উপর যত পরিমাণ শুল্ক চাপাবে, আমেরিকাও সেই দেশের পণ্যের উপর তত পরিমাণ পাল্টা আমদানি শুল্ক আরোপ করবে। গত ২ এপ্রিল ট্রাম্প জানান, কোন দেশের উপর কত পরিমাণ শুল্ক আরোপ করেছে তাঁর প্রশাসন। সেই তালিকায় দেখা যায়, ‘বন্ধু’ ভারতের উপর ২৬ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। যদিও পরে চিন বাদে অন্য দেশের উপর আরোপিত শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেন ট্রাম্প। তবে দিনে দিনে চিনের সঙ্গে শুল্কযুদ্ধ বেড়েই চলেছে আমেরিকার। কখনও আমেরিকা চিনা পণ্যের উপর শুল্কের হার বৃদ্ধি করছে, আবার কখনও পাল্টা শুল্ক চাপাচ্ছে চিনও। দুই দেশের এই বাণিজ্যযুদ্ধে নয়াদিল্লিকে পাশে থাকার আবেদন করেছে বেজিং। যদিও এই বিষয়ে মোদী সরকার কোনও মন্তব্য করেনি। সেই আবহেই এ বার মাস্কের সঙ্গে ফোনে কথা বললেন মোদী। এই ফোনালাপ খুবই উল্লেখযোগ্য বলে মনে করছেন অনেকে। মাস্কের সঙ্গে কথা বলার বিষয়টি জানিয়ে মোদী লেখেন, ‘‘বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। চলতি বছরের শুরুতে ওয়াশিংটন ডিসিতে আমাদের মধ্যে যে আলোচনা হয়েছিল, সেই বিষয়গুলিও উঠে এসেছে। আমরা প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছি। এই সব ক্ষেত্রে আমেরিকার সঙ্গে আমাদের অংশীদারিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’’ মাস্কের সংস্থা টেসলা এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে ভারতে প্রবেশ করেনি। তবে চলতি বছরের শুরুতে ট্রাম্প-মাস্কের বৈঠকের পরই এ দেশে বৈদ্যুতিন গাড়ি শিল্পে টেসলা ভারতে নিয়োগ করা শুরু করেছে। অতীতে বৈদ্যুতিন গাড়ি শিল্প নিয়ে ভারত সরকার এবং মাস্কের মধ্যে চাপানউতর ছিল। গাড়ি সংস্থার প্রধান উদ্বেগের বিষয় ছিল, ভারতে বৈদ্যুতিন গাড়িতে উচ্চ আমদানি শুল্ক! তবে গত বছরের মার্চে বৈদ্যুতিন গাড়িতে শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় ভারত সরকার। তার পরই মোদী-মাস্কের বৈঠক হয়।ওয়াশিংটনের ব্লেয়ার হাউসে মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন ইলন মাস্ক। সঙ্গে ছিলেন সঙ্গিনী শিভন জ়িলিস এবং তিন শিশু সন্তান। মোদীর হাতে বিশেষ এক উপহারও তুলে দেন তিনি। মাস্কের সংস্থা স্পেসএক্সের মহাকাশযানের একটি অংশ প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দিয়েছিলেন তিনি। মোদীও মাস্কের তিন সন্তানের জন্য বই নিয়ে গিয়েছিলেন। তালিকায় ছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা বইও।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement