মালদহের আশ্রয় শিবির পরিদর্শনে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্যেরা

IMG-20250418-WA0252

সংশোধিত ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে কয়েকদিন আগেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন এলাকা।অশান্তির মাঝেই তিনজনের মৃত্যু হয়। সেই হিংসার ঘটনায় অনেকেই নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে মালদহে আশ্রয় নেন। শুক্রবার সেই ঘরছাড়াদের সঙ্গেই কথা বললেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্যেরা। এদিন সকালেই মালদহে পৌঁছন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল। এদিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ বন্দে ভারতে মালদহ টাউন স্টেশনে নামেন তাঁরা। সেখান থেকে গাড়িতে চেপে সোজা পারলালপুর হাইস্কুলের ক্যাম্পের উদ্দেশে রওনা দেন। দুপুর নাগাদ ক্যাম্পে পৌঁছন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্যরা। আশ্রয়শিবির ঘুরে দেখেন তাঁরা। কথা বলেন ঘরছাড়াদের কয়েক জনের সঙ্গেও। কমিশনের সদস্যেরা আশ্রয়শিবির ছাড়তেই পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান ঘরছাড়ারা।শুক্রবার সকাল থেকেই কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয় পারলালপুর হাই স্কুল। কাউকেই ভিতরে ঢুকতে বা বেরোতে দেওয়া হয়নি। আটকে দেওয়া হয় ঘরছাড়াদের সঙ্গে দেখা করতে আসা আত্মীয়স্বজনদেরও। কমিশনের সদস্যেরা বেরিয়ে যেতেই ক্ষোভে ফেটে পড়়েন ঘরছাড়াদের একাংশ। ক্যাম্পে থাকা ধুলিয়ানের ঘরছাড়া পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। শোনেন ঘটনার বিবরণ। পাশাপাশি তাঁদের বিভিন্ন সমস্যা ও অভাব-অভিযোগের কথাও শোনেন। ঘরছাড়াদের সঙ্গে কথা বললেও সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে চাননি প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। সূত্রের খবর প্রতিনিধি দলের সদস্যরা দিল্লিতে গিয়ে কমিশনের আধিকারিকের কাছে একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পেশ করবেন। অন্যদিকে, মানবাধিকার কমিশনের এই পরিদর্শনে রাজ্যকে বদনাম করার চেষ্টা বলে মনে করছে শাসকদল তৃণমূল। কমিশনের প্রতিনিধিদের পরিদর্শন সম্পর্কে রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা জানান, মুর্শিদাবাদের ঘটনায় প্রশাসন ও মুখ্যমন্ত্রী সবরকম পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। তা সত্ত্বেও রাজ্যকে বদনাম করতেই কমিশন পাঠানো হয়েছে। এর পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যই রয়েছে। মন্ত্রীর যুক্তি, আগে মণিপুর যাওয়া উচিত ছিল মানবাধিকার কমিশনের। সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের আবহে কয়েকদিন আগে অশান্তি ছড়িয়ে পড়েছিল মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর, সুতি, শমসেরগঞ্জ-সহ কিছু অঞ্চলে। সেই গোলমালে তিন জন নিহত হন। ঘটনার তদন্তে বুধবার সিট গঠন করেছে পুলিশ। অশান্তির জেরে সাময়িক ভাবে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হলেও গত ৪৮ ঘণ্টায় মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকায় প্রশাসনের উদ্যোগে দ্রুত বদলাচ্ছে পরিস্থিতি। স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে জনজীবন। অশান্তি কবলিত এলাকায় জনজীবন স্বাভাবিক করার পাশাপাশি ঘরছাড়া পরিবারগুলিকে ঘরে ফেরাতে বিশেষও উদ্যোগী হচ্ছে প্রশাসন। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি ও দোকানের তালিকা প্রস্তুত করতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হচ্ছে সমীক্ষা রিপোর্ট তৈরির কাজ।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement