নতুন ওয়াকফ আইনের সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মামলা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। সেই মামলার প্রেক্ষিতে কেন্দ্রের কাছে জবাব তলব করল শীর্ষ আদালত।ওয়াকফ সংক্রান্ত মামলায় বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট জানায়, বোর্ডে নতুন কোনও নিয়োগ করা যাবে না। ওয়াকফ সম্পত্তি চরিত্রে কোনও বদল করা যাবে না। পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত এই নির্দেশ বহাল থাকবে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আগামী সাত দিনের মধ্যে কেন্দ্র ও সব রাজ্যকে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। মামলার পরবর্তী শুনানি ৫ মে। বৃহস্পতিবার শুনানির শুরুতে প্রথমে সওয়াল করেছিলেন কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। তিনি জানান, কেন্দ্রের কাছে প্রচুর তথ্য জমা পড়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, বহু জমি ওয়াকফ জমি হিসাবে নথিভুক্ত রয়েছে। নিজেদের সম্পত্তি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বহু মানুষের মনে। এর পরেই সুপ্রিম কোর্টের কাছে রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য সময় চায় কেন্দ্র। তার ভিত্তিতে কেন্দ্রকে এক সপ্তাহ সময় দিয়েছে শীর্ষ আদালত। নতুন ওয়াকফ আইনের সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মামলা হয়েছিল। তার প্রেক্ষিতে কেন্দ্রকে জবাব দিতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। এর পরেই বিচারপতি বলেন, ‘‘আমরা আগেই বলেছি, এই আইনে কিছু ভাল দিক অবশ্যই রয়েছে। এই পুরোপুরি স্থগিত করে দেওয়ার কথা কখনওই বলা হয়নি। কিন্তু আমরা চাই না, এখন যা পরিস্থিতি, তা বদলে যাক। বিষয়টি এখনও আদালতে বিচারাধীন। পরিস্থিতি যাতে না বদলায়, সেটা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।’’ মামলাকারীদেরও উদ্দেশে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, পাঁচটি পিটিশন বাছাই করা হোক। ওই পাঁচটি পিটিশনকে প্রধান পিটিশন হিসাবে গণ্য করে শুনানি হবে। এদিন শীর্ষ আদালত সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতার কাছে জানতে চান, “আপনি কথা দিতে পারেন, আপাতত ওয়াকফ বোর্ড আর কাউন্সিলে কোনও নিয়োগ হবে না? আপনি কি এটা লিখিতভাবে জানাতে পারবেন যে ১৯৯৫ সালের ওয়াকফ আইনে যে প্রপার্টিগুলো ওয়াকফ হিসেবে রেজিস্টার রয়েছে, সেগুলো এখন-ই ডি-নোটিফাই করবেন না?” জবাবে তুষার মেহতা আশ্বস্ত করে বলেন,”এই মুহূর্তে ওয়াকফ বোর্ড এবং কাউন্সিলে কোনও নতুন নিয়োগ হবে না। ১৯৯৫ সালের ওয়াকফ আইনের আওতায় যেসব সম্পত্তি ওয়াকফ হিসেবে রেজিস্টার হয়েছে, সেগুলো ডি-নোটিফাই করা হবে না। আগামী ৭ দিনের মধ্যে কেন্দ্রের তরফে সংক্ষিপ্ত জবাব দাখিল করা হবে।” আদালতের নির্দেশ ও সলিসিটর জেনারেলের আশ্বাস সবটাই নথিবদ্ধ করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, দুই কক্ষে পাশ হওয়ার পর রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিয়ে দেশ জুড়ে সংশোধিত ওয়াকফ আইন চালু করে কেন্দ্রীয় সরকার। সংসদের দুই কক্ষেই বিলের বিরোধিতা করেছিল বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। বিভিন্ন মুসলিম সংগঠন ছাড়াও একাধিক বিরোধী সাংসদরা সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দাখিল করেন।বুধবার এই সংক্রান্ত মোট ৭৩টি মামলা শোনে সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। বেঞ্চে ছিলেন বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনও। উল্লেখ্য, গত দিনই সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট কোনও অন্তর্বতী স্থগিতাদেশ দেয়নি।