বারাণসী গণধর্ষণকাণ্ডে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যাতে কড়া শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়, সেই নির্দেশই দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।শুক্রবার একাধিক সরকারি প্রকল্প উদ্বোধনে নিজের কেন্দ্র বারাণসীতে যান মোদী। সেখানে পৌঁছেই গণধর্ষণকাণ্ডে বিস্তারিত তথ্য তলব করেন প্রধানমন্ত্রী। বাবতপুর বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন বারাণসীর পুলিশ কমিশনার, ডিভিশনাল কমিশনার ও কালেক্টর। তিনজনের কাছে গণধর্ষণের ঘটনা নিয়ে বিস্তারিত জানতে চান প্রধানমন্ত্রী। তারপরেই গণধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোরতম শাস্তির ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন তিনি। গত কয়েক দিন ধরেই এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্ষোভের আবহ তৈরি হয়েছে বারাণসীতে। সেই আবহে প্রধানমন্ত্রী বারাণসী পৌঁছেই এই ঘটনা সম্পর্কে তথ্য চান বলে সূত্রের খবর। তার পরই তিনি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোরতম শাস্তির ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছেন।নিজের সংসদীয় কেন্দ্র পা রাখার পর জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী। সেই বৈঠকে ছিলেন পুলিশ কমিশনার, বিভাগীয় কমিশনার এবং বারাণসীর জেলাশাসক-সহ শীর্ষ আধিকারিকেরা। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকে বারাণসীতে তরুণীর গণধর্ষণ বিষয়টি নিয়ে জানানো হয় প্রধানমন্ত্রীকে। সূত্রের খবর, প্রশাসনের তিন আধিকারিকের কাছে আলাদা আলাদা ভাবে ঘটনা সম্পর্কে খোঁজ নেন প্রধানমন্ত্রী। তিন আধিকারিককেই প্রধানমন্ত্রীর কড়া নির্দেশ, সব অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে আইনি প্রক্রিয়া অবিলম্বে শুরু করতে। ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে, তা-ও নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেন মোদী। বারাণসী গণধর্ষণকাণ্ডে শহরে ক্ষোভের আগুন জ্বলছে গত কয়েক দিন ধরেই।রাজ্য প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, এই অপরাধের কথা শোনার পর প্রধানমন্ত্রী অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোরতম শাস্তির ব্যবস্থার নির্দেশ দিয়েছেন। শুধু তা-ই নয়, এই ধরনের ঘটনা যাতে আগামী দিন রোখা যায়, তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপেরও নির্দেশ দিয়েছেন। তরুণীকে গণধর্ষণের ঘটনায় ২৩ জন অভিযুক্তের মধ্যে ন’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁদের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। গত ৪ এপ্রিল তরুণীকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। ৩ এপ্রিল থেকে নিখোঁজ ছিলেন তরুণী। অভিযোগ, এক বন্ধু তাঁকে পিশাচমোচন এলাকার একটি হুক্কা বারে নিয়ে যান। সেখানে আরও কয়েক জন তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন। নির্যাতিতার অভিযোগ, পানীয়ের সঙ্গে মাদক মিশিয়ে তাঁকে খাওয়ানো হয়। তার পর সিগরা এলাকার কয়েকটি হস্টেলে নিয়ে গিয়ে সাত দিন ধরে ২৩ জন মিলে গণধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ। নাবালিকাকে ৬ দিন ধরে বিভিন্ন জায়গায় ২৩ জন গণধর্ষণ করে বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। গত ২৯ মার্চ নাবালিকার এক বন্ধু তাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। তার পরে নাবালিকার অন্য বন্ধুরা বিভিন্ন জায়গায় তাকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় ২৩ জনের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ১২ অভিযুক্তের নাম পাওয়া গিয়েছে। বাকি ১১ জন অভিযুক্তের নাম এখনও জানা যায়নি। পুলিশ ইতিমধ্য়েই ১০ জন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে।বারাণসীর ঘটনায় তুমুল শোরগোল পড়েছে দেশ জুড়ে।