কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ বহাল রেখে সুপ্রিম কোর্ট ২০১৬ সালের এসএসসির গোটা প্যানেলই বাতিল করে দিয়েছে। এর ফলে চাকরি হারিয়েছেন প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী। সেই রায়ের পর থেকেই চাকরি বাঁচাতে পথে নেমেছেন চাকরিহারারা।বুধবার রাতভর এসএসসি ভবনের সামনে অবস্থানে বসেন চাকরিহারারা। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁরা অনশনের ঘোষণা করেন। চাকরিহারাদের দাবি, দ্রুত রাজ্য সরকার ও স্কুল সার্ভিস কমিশনকে ওএমআর শিটের মিরর ইমেজ ও যোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে। যতক্ষণ তা না প্রকাশ হবে, অনশন চলবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে শুরু হয় অনশন। জানানো হয়েছে, ২০১৬-র এসএসসি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যোগ্য চাকরিহারা শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের নামের তালিকা প্রকাশের দাবি ও পুলিশি লাঠিচার্জের প্রতিবাদে তাঁদের এই কর্মসূচি। নাগরিক সমাজকে তাঁদের আন্দোলনের পাশে থাকার আর্জি জানিয়েছেন চাকরিহারা শিক্ষকদের একাংশ। সাংবাদিক বৈঠকে জানানো হয়, অনশনে প্রথম বসছেন সারডাঙ্গা হাইস্কুলের শিক্ষক পঙ্কজ রায়। নদিয়ার নাকাশিপাড়ার একটি স্কুলের নবম-দশমের জীবনবিজ্ঞানের শিক্ষক সুমন বিশ্বাস। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর আপাতত তিনিও চাকরিহারার দলেই। এ দিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সুমন বিশ্বাস জানান, বুধবার আচার্য সদনে তাঁরা স্কুল সার্ভিস কমিশনের অফিসে চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার সঙ্গে দেখা করে ২০১৬ সালের প্যানেলের যোগ্যদের নির্ভুল, নিখুঁত তালিকা প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন। ওএমআর কপিগুলোর মিরর ইমেজ, যা অনলাইনে রয়েছে, তা প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন। সুমনের দাবি, সিদ্ধার্থ মজুমদার জানান, মিরর ইমেজ রয়েছে। যোগ্যদের তালিকা প্রকাশও করা হবে। কিন্তু তা কবে প্রকাশ করবে তা নিশ্চিত করে জানানো হয়নি। সুমন বলেন, ‘সরকার ও এসএসসি যোগ্যদের চাকরি বাঁচাতে চাইলে সময় লাগার কথাও না। আমরা যারা নিজের মেধায় চাকরি পেয়েছি, কোনও দুর্নীতির অভিযোগ নেই, তারা কেন এই দুর্নীতির দায়ে শাস্তি ভোগ করব? তাই আমরা আন্দোলনে নেমেছি। যতক্ষণ না যোগ্যদের তালিকা, ওএমআরের মিরর ইমেজ প্রকাশ হবে, অনশনের কর্মসূচি চলবে।’ এদিকে দিলীপ ঘোষ বললেন, “অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নিজের মতো করে চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু এই সরকারের সমস্যা সমাধানের ইচ্ছেই নেই।”উল্লেখ্য, বুধবার চাকরিহারারা মিছিল ও এসএসসি ভবন অভিযানের ডাক দিয়েই জানিয়েছিলেন, তাঁরা চান না এতে রাজনীতির রং লাগুক। আমজনতাকে পাশে চেয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে অনশনকারীদের মঞ্চে দেখা গেল বিজেপির একাধিক নেতা-নেত্রীকে। এতেই তৃণমূলের দাবি, শিক্ষকদের অসহয়তার সুযোগকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক ফায়দা লাভের চেষ্টা করছে বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস সত্ত্বেও চাকরিহারাদের ভুল বোঝানো হচ্ছে বলেও দাবি ঘাসফুল শিবিরের।