দিনহাটা: হাসপাতাল ভর্তি থাকা রোগীকে নার্সিং হোমে নিয়ে গিয়ে অস্ত্র প্রচার করায় উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী সামাজিক মাধ্যমে সপ্তাহখানেক আগে সরব হতেই দিনহাটা হাসপাতালের বিসি বর্মা সহ দুই চিকিৎসককে বদলির নির্দেশ দিল স্বাস্থ্য দপ্তর। মহকুমা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দুই চিকিৎসককে মাথাভাঙ্গা এবং তুফানগঞ্জে বদলি করা হয়। গ্রামের এক মহিলাকে নানাভাবে ভুল বুঝিয়ে দুই চিকিৎসক নার্সিংহোমে নিয়ে গিয়ে অস্ত্র প্রচার করে। সামাজিক মাধ্যমে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তাদের ডাকাত বলে উল্লেখ করেন। সামাজিক মাধ্যমে দুই চিকিৎসককে ডাকাত বলে মন্ত্রী উল্লেখ করার সাত দিনের মাথায় ২ চিকিৎসককে বদলি করার ঘটনায় ব্যাপক আলোড়ন ছড়িয়ে পড়ে। দিনহাটা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের আত্মীয় পরিজনদের অনেকেই মন্ত্রীর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান। নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক এই রোগীর আত্মীয় পরিজনদের অনেকে জানান, চিকিৎসকদের একাংশ হাসপাতালের পরিবর্তে অধিকাংশ সময় ব্যয় করেন প্রাইভেট প্র্যাকটিস এবং নার্সিংহোমে। গ্রামের দুস্থ অসহায় মানুষের জন্য যখন রাজ্য সরকার স্বাস্থ্য পরিষেবা কে সাজিয়ে তোলার চেষ্টা করছে তখন কতিপয় চিকিৎসক হাসপাতালে বুড়ি ছোঁয়া দিয়ে বাইরে চিকিৎসা করতে ব্যস্ত থাকেন। এরফলে অনেকেই ঠিকমতো পরিষেবা পান না বলে অভিযোগ। আরো একাধিক চিকিৎসক রয়েছেন তারাও নানাভাবে রোগীদেরকে ফুসলিয়ে নার্সিংহোমে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করায় তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে। গত এক সপ্তাহ আগে দিনহাটার প্রত্যন্ত গ্রামের এক মহিলা প্রসব বেদনা নিয়ে দিনহাটা হাসপাতালে ভর্তি হয়। হাসপাতালে ভর্তি থাকা সেই মহিলা রোগীকে ছুটি দিয়ে নার্সিংহোমে নিয়ে গিয়ে অস্রোপ্রচার করার অভিযোগ উঠে দিনহাটা হাসপাতালে ওই দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ বিষয়টি জানতে পেরেই গত ২৭ মার্চ সামাজিক মাধ্যমে চিকিৎসক বিসি বর্মা ছাড়াও হাসপাতালে আরও এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনেন। উদয়ন সামাজিক মাধ্যমে উল্লেখ করেন,ডাকাত বি সি বর্মা,গরীব মহিলাকে প্রেগন্যান্ট হবার পর থেকেই দেখছেন। গতকাল লেবার পেইন শুরু হবার পর রুগী দিনহাটা হাসপাতালে ভর্তি হন। ডাকাত আজ জোর করে পেশেন্ট কে ছুটি দিয়ে দেন।যন্ত্রণায় কাতর রুগি বাধ্য হয়ে ডিভাইন নার্সিং হোমে গেলে বেলা ২.৩০ টায় আর এক ডাকাত তিনিও হাসপাতালের সাথে জড়িত, সিজার করে ডেলিভারি করান। এরাই সব সমাজের মেধাবী সন্তান।ওই ডাক্তারকেই নার্সিং হোমের খরচ মেটাতেই হবে।রাত জাগা লাল পাখীরা এখন কোথায়?’ সামাজিক মাধ্যমে মন্ত্রী উদয়নের এই লেখা প্রকাশ হতেই নড়ে চড়ে বসে স্বাস্থ্য দফতর।দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে সুপার রঞ্জিত মণ্ডল বলেন,”মন্ত্রী সামাজিক মাধ্যমে দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে হাসপাতালে ভর্তি রোগীকে নার্সিংহোমে নিয়ে গিয়ে অস্ত্রোপচার করার অভিযোগ করেছেন। দুই চিকিৎসককে তাদের পূর্বের জায়গায় বদলির নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।মন্ত্রী উদয়ন বলেন,”গ্রামের এক মহিলা প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। তাকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দিয়ে জোর করে নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে সামাজিক মাধ্যমে বিষয়টি তুলে ধরেছি। স্বাস্থ্য দফতর গোটা ঘটনা খোঁজখবর করে তাদের বদলির নির্দেশ দিয়েছে। হাসপাতলে যেসব সুযোগ সুবিধা রয়েছে তা অনেক নার্সিংহোমেই নেই।