শহরজুড়ে প্রায় ৪৩ মিছিল, রামনবমীর নিরাপত্তায় জোর পুলিশের

IMG-20250405-WA0266

রামনবমী উপলক্ষে এখনও পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, শুধুমাত্র কলকাতা জুড়ে প্রায় ৪৩টি মিছিল বেরনোর কথা। বেশ কিছু হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ছাড়াও মিছিলের ডাক দিয়েছে বিজেপি। এন্টালি, কাশীপুর, হেস্টিংস, পিকনিক গার্ডেন এলাকা থেকে বড় মিছিল বেরনোর কথা। রামনবমীর দিন অশান্তি এড়াতে কঠোর নিরাপত্তায় কলকাতা পুলিশ। সূত্রের খবর, রামনবমীর দিন পরিকল্পনা নিয়ে শনিবারেই বিশেষ বৈঠকে বসবেন কলকাতা পুলিশের কমিশনার মনোজ ভার্মা। শনিবার এক বিবৃতির মাধ্যমে জানা গিয়েছে, কলকাতা উত্তর থেকে শুরু করে কালীঘাট, ঠাকুরপুকুর, বাঘাযতীন, দেশপ্রিয় পার্ক, কলকাতা মধ্য এবং কলকাতা দক্ষিণে মিছিল বেরবে রামনবমীর। তার মধ্যে বিজেপির মিছিলও রয়েছে। কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, রামনবমী উপলক্ষ্যে প্রায় সাড়ে তিন থেকে চার হাজার পুলিশকর্মীকে নিরাপত্তা রক্ষায় রাখা হতে পারে।পাশাপাশি, গোটা রাজ্য জুড়ে ২৯ জন আইপিএস অফিসারকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হবে। কলকাতায় তুলনায় বড় এবং পুরনো মিছিলে ডিসি সহ উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকদের উপস্থিত থাকার কথা। মিছিলের শুরুর জায়গা থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত পুরোটাই হবে পুলিশি প্রহরায়। নজর রাখা হবে ড্রোনের মাধ্যমে। আচমকা যদি কোনও অশান্তির পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় তা নিয়ন্ত্রণে আনতে যাবতীয় ব্যবস্থা থাকবে পুলিশকর্মীদের কাছে।এমনকি, তৈরি রাখা হচ্ছে কুইক রেসপন্স টিমও। জানা গিয়েছে, কলকাতার পাশাপাশি রাজ্যের ১০টি জেলার দিকে বিশেষভাবে নজর দিচ্ছে প্রশাসন। ২৯জন আইপিএস এই ১০ জেলায় নজর রাখবেন। তার মধ্যে রয়েছে আসানসোল, হাওড়া, হুগলি, দুই ২৪ পরগণার মতো জেলা। অস্ত্র নিয়ে যাতে মিছিলে কেউ না বেরয় সেদিকেও কড়া নজর দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলায় জেলায় মিছিল, সভা, উৎসবের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি। এর মাঝেই রামনবমীতে ‘জঙ্গি হামলা’র আশঙ্কা প্রকাশ করলেন মালদহের ইংরেজবাজারের বিধায়ক শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী। মালদহ, মুর্শিদাবাদের সীমান্ত এলাকায় মিছিলে হামলা হতে পারে, এই আশঙ্কায় প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি পাঠালেন তিনি। তাতে আবেদন, হামলার মোকাবিলায় আধাসেনাকে প্রস্তুত রাখা হোক।সাধারণত কোনও উৎসবে সিভিক ভলান্টিয়ারদের উপরই নিরাপত্তার দায়িত্ব বাড়ানো হয়। কিন্তু শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরীর দাবি, সিভিক ভলান্টিয়ারের বদলে সেনা চাই রামনবমীর নিরাপত্তায়। শনিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শ্রীরূপা দেবীর বক্তব্য, ”প্রতি বছর ইংরেজবাজারে রামনবমী খুব বড় করে উদযাপন করা হয়। মিছিল বেরয়। রবিবারও খুব বড়সড় সেলিব্রেশন হবে এখানে। কিন্তু আমি আশঙ্কা করছি, রামনবমীর মিছিলে জঙ্গি হামলা হবে। কারণ সম্প্রতি মোথাবাড়ি-বেলডাঙায় যেভাবে অশান্তি হয়েছে, একটা বিশেষ ধরনের ভঙ্গিতে, তা যথেষ্ট উদ্বেগের। ছোট ছোট ছেলেদের মগজধোলাই করে তাদের দিয়ে এসব জায়গায় দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা হচ্ছে। যাতে জুভেনাইল অ্যাক্টে তারা শাস্তি থেকে কিছুটা ছাড় পায়। এই বিশেষ ধরনটা কোথা থেকে এল? এরা নীরব ঘাতক! এই মালদহ, মুর্শিদাবাদের সীমান্ত এলাকাগুলোয় রয়েছে। এদের মাস্টারমাইন্ডরা জম্মু-কাশ্মীরে থাকে। কিন্তু সংগঠনের সদস্যরা এখন এই বাংলায় নিরাপদ আশ্রয় নিয়েছে।” তাঁর নিশানায় বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের স্লিপার সেল। সম্প্রতি বেলডাঙা ও মোথাবাড়িতে অশান্তির ঘটনায় জঙ্গিমূলক কার্যকলাপকে দায়ী করছে বিজেপি। এরপর তাঁর দাবি, ”আমি পুলিশ প্রশাসনকে বলতে চাই, শুধু সিভিক ভলান্টিয়ার নয়। দরকার হলে আধাসেনা বাহিনী তৈরি রাখা হোক। মানুষকে নিরাপত্তা দিতে হবে। আমি এটা নিয়ে আমাদের জেলার এসপি, জেলাশাসকের পাশাপাশি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছি। তাতে দাবি করেছি, রামনবমীতে নিরাপত্তার জন্য কমব্যাট ফোর্স চাই।” যদিও রামনবমীর জন্য ইতিমধ্যে পুলিশ প্রশাসন প্রস্তুতি সেরেছে। বিশেষ কয়েকজন আইপিএস-কে নিয়ে তৈরি হয়েছে টিম, যারা জেলায় জেলায় নজরদারি চালাবে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সীমান্তবর্তী এলাকায় বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করেছে পুলিশ।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement