চাকরি হারিয়ে শূন্য ক্লাসরুম

IMG-20250404-WA0240

সুপ্রিম রায়ে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি চলে যাওয়ায় কোনও স্কুলে গ্রুপ ডি কর্মীই আর রইল না। দেশের শীর্ষ আদালতের রায়ে বাংলার বহু স্কুলের অনেকটা এখন উদয়ন পণ্ডিতের পাঠাশালা মতো অবস্থা। বন্ধ না হলেও বহু স্কুলে কোনও বিষয়ে পড়ানোর শিক্ষকই থাকছেন না।এক প্রধান শিক্ষিকা বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলের ছাত্রীদের সংখ্যা অনেক, এক যোগে এত জন শিক্ষক চলে যাওয়ায় আমরা স্কুল চালাব কী করে। এতগুলো ক্লাস নেব কী করে।এক স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘জোর গলায় বলতে পারি, আমার স্কুলে যাঁরা শিক্ষকতা করেছেন, তাঁরা যোগ্যতার সঙ্গেই শিক্ষকতা করেছেন। বিগত বছরগুলোয় স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা শুধু নয়, আমরাও উপকৃত হয়েছি। ওঁরা এক একটি দিক ধরেছিলেন। এখন তো আমাদের বলার কোনও মূল্য নেই। ওঁদের দিকে তাকাতেও কষ্ট হচ্ছে। এক জন শিক্ষক হয়ে কতটা যন্ত্রণায় রয়েছি সেটা বলে বোঝাতে পারব না।এক প্রধান শিক্ষকের মন্তব্য, ‘আমাদের ১৮০০ ছাত্রের জন্য ৩৬ জন পার্মানেন্ট শিক্ষক। চাকরি হারানো ছয় জনের মধ্যে বায়োলজির দু’জন রয়েছেন। এখন পড়াশোনা কী ভাবে স্বাভাবিক রাখা যাবে তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে গেলাম।আর এক প্রধান শিক্ষিকা স্বাগতা মণ্ডল কোনার জানান, ‘‘এর ফলে এডুকেশন ও সংস্কৃত বিষয়ে পড়ানো নিয়ে সমস্যা হবে। ছাত্রীর সঙ্গে শিক্ষকের অনুপাত এখানে কম আছে। বছরের মাঝে নতুন রুটিন তৈরি করতে হবে। চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর অভাবে কাজে অসুবিধা হবে। এমনকি এদের কাছে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষার খাতা দেখার নির্দেশ এসেছে। সে ক্ষেত্রেও সমস্যা হবে। নেপালিপাড়া হাই স্কুলের চাকরি হারানো এক শিক্ষিকা বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করছি না কিন্তু, আমাদের মতো যোগ্যদের ভুলটা কোথায়? এটা আমাদের বলা হোক। আমরা তো পরীক্ষা দিয়ে পাশ করে চাকরি পেয়েছি। যারা অযোগ্য তাদের জন্য যোগ্যদের চাকরি চলে গেল! এটা মেনে নিতে পারছি না।এই বিষয়ে হেডমিস্ট্রিসেস সংগঠনের সদস্যদের বক্তব্য, বর্তমানে বহু স্কুলে শিক্ষক শিক্ষিকা কম আছে। তার ওপর এই রায়ের ফলে বহু শিক্ষকের চাকরি চলে যাওয়ায় শিক্ষা ব্যবস্থা একেবারে ধ্বংস হয়ে যাবে।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement