বুধবারই লোকসভায় পেশ করা হয়েছিল ওয়াকফ সংশোধনী বিল। আর বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় পেশ সেই বিল। দুপুরে বিলটি সংসদের উচ্চকক্ষে পেশ করেন সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু। বিল পেশের পরেই রাজ্যসভায় শুরু হয় আলোচনা। বুধবার লোকসভায় পেশ হয় ওয়াকফ সংশোধনী বিল। ১২ ঘণ্টা টানা বিতর্কের পরে মধ্যরাতে বিলটি পাশ হয়েছে লোকসভায়। তারপরেই বৃহস্পতিবার ওয়াকফ সংশোধনী বিল রাজ্যসভায় পেশ করে নরেন্দ্র মোদী সরকার। বিল পেশ করে রাজ্যসভায় বিল পেশের সময় কিরেন রিজিজু দাবি করেন, নতুন সংশোধনী পাশ হয়ে গেলে ওয়াকফ সম্পত্তি থেকে রোজগার বাড়বে বোর্ডের। তিনি দাবি করেন, ২০০৬ সালে সাচার কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী দেশে ৪.৯ লক্ষ ওয়াকফ সম্পত্তি ছিল। এ থেকে আয় হওয়া উচিত ছিল ১২ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু সেবার মাত্র ১৬৩ কোটি টাকা আয় হয় সরকারের। ২০১৩ সালে ইউপিএ সরকার ওয়াকফ আইন সংশোধন করেও আয় বাড়নি। সেসময় ৮.৭২ লক্ষ ওয়াকফ সম্পত্তি থেকে আয় ছিল মাত্র ১৬৬ কোটি টাকা। রিজিজুর দাবি, নতুন আইনে সেই রাজস্বই বাড়বে। বিরোধীদের কাছেও সমর্থন প্রার্থনা করেছেন তিনি।
২০১৩ সালে ইউপিএ সরকার ওয়াকফ আইনে কিছু পরিবর্তন আনে। কিন্তু তাতেও সে সময়ে ৮.৭২ লক্ষ ওয়াকফ সম্পত্তি থেকে আয় ছিল মাত্র ১৬৬ কোটি টাকা।শাসক শিবিরের দাবি, সেই ছবিটি পাল্টাতেই এই সংশোধনী আনা হয়েছে। যাতে ওয়াকফ থেকে আয় বাড়ে। সেই অর্থের মাধ্যমে সার্বিক ভাবে মুসলিম ও মুসলিম মহিলাদের আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী করে তোলা সম্ভব হয়। বুধবার লোকসভায় ওয়াকফ বিল নিয়ে ভোটাভুটিতে মোট ৫২০ জন সাংসদ অংশ নিয়েছিলেন। বিলের পক্ষে ২৮৮ এবং বিপক্ষে ২৩২ জন সাংসদ ভোট দেন। ব্যবধান ৫৬ ভোটের। লোকসভার মতোই রাজ্যসভাতেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে শাসক জোটের। রাজ্যসভায় এনডিএ-র মোট ১২৫ জন সাংসদ রয়েছেন। ছ’টি আসন শূন্য রয়েছে। সংসদের দুই কক্ষে পাশ হওয়ার পরে ওই বিলে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর অনুমোদন মিললে ১৯৯৫ সালের ওয়াকফ আইনের নতুন নাম হবে ‘ইউনিফায়েড ওয়াকফ ম্যানেজমেন্ট, এমপাওয়ারমেন্ট, এফিশিয়েন্সি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যাক্ট’। নতুন বিলে ওয়াকফ কাউন্সিলে এই প্রথম বার দু’জন মহিলাকে স্থান দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সরকার মহিলা ও মুসলিমদের স্বশক্তিকরণের যুক্তি দিয়েছে। তবে ওয়াকফে দুই অমুসলিম সদস্য মনোনয়নের প্রস্তাব ঘিরে তীব্র আপত্তি তুলেছে মুসলিম সংগঠনগুলি।