গুজরাটের বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে আর্থিক সাহায্য

IMG-20250402-WA0343

কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে দেশের দু’প্রান্তে দুটি আলাদা আলাদা বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ ঘটেছে। দুটি ঘটনাই মর্মান্তিক। দুটি ঘটনাতেই একাধিক প্রাণহানি এবং বিস্তর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অথচ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে শুধু গুজরাটের বাজি কারখানায় মৃতদের পরিবারের প্রতি শোকপ্রকাশ করা হল। আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করা হল। বাংলার ঘটনার উল্লেখ পর্যন্ত করা হল না। সেটা নিয়েই এবার প্রশ্ন তুলল তৃণমূল।মঙ্গলবার সন্ধেয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে এক্স হ্যান্ডেলে নরেন্দ্র মোদির শোকবার্তা পোস্ট করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শোকবার্তায় বলেন, ‘গুজরাটের বনাশকাঁটায় বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে প্রাণহানিতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। যারা নিকটাত্মীয়দের হারিয়েছেন তাঁদের প্রতি সমবেদনা রইল। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। স্থানীয় প্রশাসন আহত এবং যারা এর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত তাদের পাশে রয়েছে।’ একই সঙ্গে ওই পোস্টেই ঘোষণা করা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিল থেকে মৃতদের পরিবার পিছু ২ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য করা হবে। আহতদের দেওয়া হবে ৫০ হাজার টাকা করে। মোদির ওই শোকবার্তায় পাথরপ্রতিমার ঘটনার উল্লেখ পর্যন্ত নেই।স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন তুলছে রাজ্যের শাসকদল। তৃণমূলের বক্তব্য, একই ধরনের ঘটনা। একই কারণে ঘটা দুর্ঘটনা। দুটোই ভয়াবহ। অথচ একটা ঘটনায় আর্থিক সাহায্য, আর একটি ঘটনার উল্লেখ পর্যন্ত নেই! কেন এই বৈষম্য? তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ সোশাল মিডিয়ায় লিখছেন, ‘পক্ষপাতদুষ্ট প্রধানমন্ত্রী। গুজরাটে বাজি কারখানায় হতাহতদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দরদভরা টুইট ও ত্রাণ তহবিল থেকে ক্ষতিপূরণ। বাংলার বাজি কারখানা দুর্ঘটনায় হতাহতদের কোনো উল্লেখ নেই। এই বিজেপি বাংলাবিরোধী। এই কারণেই এদের ‘বহিরাগত’ বলা হয়।’উল্লেখ্য, ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের,এর মধ্যে তিনজন শিশু রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।স্থানীয় সূত্রে খবর, রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ আচমকা বিকট শব্দ শোনা যায়। তার কিছু ক্ষণ বাদে স্থানীয় বাসিন্দারা দেখতে পান আগুনের গ্রাসে একটি বাড়ি দাউ দাউ করে জ্বলছে। শুরু হয় হইচই। আগুন নেভানোর চেষ্টার মধ্যে আবার কয়েকটি বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে আসে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। শুরু হয় আগুন নেভানোর কাজ।সেই সঙ্গে বাড়ির ভিতরে থাকা লোকজনকে উদ্ধারের চেষ্টা। যদিও পুলিশের একটি সূত্রে জানা যাচ্ছে, ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে এই অগ্নিকাণ্ডে। আগুন লাগার কারণ দীর্ঘদিন ধরে বাজি তৈরি করছিল ওই পরিবার। বাজি তৈরির সময় আগুন লাগে। তবে স্থানীয়দের একাংশের অনুমান, বাড়িতে বাজি মজুত করা হয়েছিল। সেখান থেকে এই অগ্নিকাণ্ড। তাঁরা জানাচ্ছেন, বাসন্তী পুজো উপলক্ষে ওই বাড়িতে বাজি তৈরি করা হচ্ছিল। রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ সেখান থেকে হঠাৎ বিস্ফোরণ হয়। কিছু ক্ষণের মধ্যে পুরো বাড়িটি আগুনের গ্রাসে চলে যায়। আবার অনেকে বলছেন, রান্নার সিলিন্ডার ফেটে দুর্ঘটনা হয়েছে। তবে পাথরপ্রতিমার বিধায়ক সমীরকুমার জানার দাবি, ‘‘বাজি তৈরি সময় হঠাৎ বিস্ফোরণ ঘটেছে। পুরো বাড়িতে আগুন ধরে গিয়েছে। ওই বাড়ির ভিতরে আরও কিছু জন থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। ঘটনাস্থলে ঢোলাহাট থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। চন্দ্রকান্ত বণিকের কারখানায় গ্রেপ্তার চন্দ্রকান্ত।আজ আতশবাজি তৈরি করার সময় বিস্ফোরণ ঘটে, পুলিশের প্রাথমিক ধারণা গ্যাস সিলিন্ডার লিক করে এমনই বিস্ফোরণ ।পাকা বাড়িতে দাউদাউ করে আগুন জ্বলতে থাকে। বাড়ির ভেতরে আটকে পড়ে আটজন। একজন গৃহবধূ কোন রকমে বাইরে বেরিয়ে আসে জলন্ত অবস্থায়। ভিতরে থাকে সাত জন চার শিশুসহ প্রত্যেকে পুড়িয়ে মারা যায়। অরবিন্দু বনিক ৬৫, অনুষ্কা বনিক ৬, প্রভাবতী বনিক ৮০,সান্তনা বণিক ২৮, অর্ণব বণিক ৯,অস্মিতা বণিক ৬ মাস, অঙ্কিত বণিক ৬ মাস। পরে এস এস কে এম এ মৃত্যু হল সুতপা বণিকের। ঘটনার ১২ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন বাজি কারখানার মালিক চন্দ্রকান্ত বণিক। অন্যদিকে গুজরাটের বনাসকাঁটায় দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। ওই ঘটনায় তদন্তে এখনও তেমন অগ্রগতি নেই। কিন্তু বহু প্রশ্ন রয়ে গিয়েছে।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement