আফটার শকের ধাক্কায়বিধ্বস্ত মায়ানমারে মৃতের সংখ্যা ১০০০ ছুঁইছুঁই

IMG-20250329-WA0300

মায়ানমার: আফটার শকের ধাক্কায় ভূমিকম্প আতঙ্ক কাটছে না মায়ানমারে। শুক্রবার ভয়াবহ ভূমিকম্পে তছনছ হয়েছে দেশটি। শনিবার ফের কেঁপে উঠল বিধ্বস্ত অঞ্চল। রিখটার স্কেলে এদিনের কম্পনের মাত্রা ছিল ৪.৩। এর ফলে গতকাল কম্পনে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি আজ ভেঙে পড়ছে বলে জানা গিয়েছে। আফটার শকের জেরে উদ্ধারকাজ এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে ত্রাণ পৌঁছানোও কঠিন হচ্ছে। এদিকে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত মায়ানমার ও থাইল্যান্ড মৃত্যু হয়েছে ১০০০-এর বেশি মানুষের। আহত প্রায় ৩০০০ জন। জোড়া ভূমিকম্পে ‘মৃত্যুপুরী’ মায়ানমার। লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। প্রকৃতির রোষে এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছে হাজারের উপর মানুষ। আহত প্রায় ৩ হাজার। নিখোঁজ বহু। ফলে মৃত্যু আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা জুন্টা সরকারের। ইতিমধ্যে পড়শি দেশে ১৫ টন ত্রাণ সামগ্রী পাঠিয়েছে ভারত। এই দুঃসময়ে মায়ানমারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সহায়তা পাঠিয়েছে রাশিয়া-চিনও। একাধিকবার আফটারশক। শুক্রবার সকালে মায়ানমারে পরপর ভূমিকম্প হয়। কম্পনের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৭.৭। ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা প্রায় ১০০০ ছুঁইছুঁই। সরকারিভাবে জুন্টা সরকার জানিয়েছে মৃতের সংখ্যা ৬৯৪। আহত অন্তত ১,৬৭০। জানা গেছে অন্তত ১৫ বার কম্পন অনুভূত হয়। তার মধ্যে সর্বোচ্চ কম্পন ছিল ৭.৭ মাত্রার। আর আফটারশক অনুভূত হয়েছে ১৪টি। দেশের বিস্তীর্ণ অংশে চলছে উদ্ধারকাজ। ফলে মৃতের সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা। মার্কিন জিওলজিক্যাল সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, মায়ানমারের মান্দালয়ে ভূমিকম্পের উৎস ছিল। ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিমি নীচে ভূমিকম্পের উৎসস্থল ছিল। ইতিমধ্যেই মায়ানমারে ‘জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করেছে সেনা–সরকারের প্রধান মিন আং হলাইং। সকল দেশ, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কাছে সাহায্য চেয়েছেন তিনি। কম্পনের আঁচ পড়েছে থাইল্যান্ডেও। সেখানে একটি নির্মীয়মাণ বহুতল ভেঙে আটকে পড়েন ১১৭ জন। মৃত্যু হয়েছে আট জনের। ব্যাঙ্ককে নির্মীয়মাণ ৩০ তলা ভবন ভেঙে পড়েছে জোরালো কম্পনের ফলে। জানা গেছে ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাজধানী নেপিদ। তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছে মায়ানমারের বিস্তৃত এলাকার বাড়িঘর, স্মৃতিসৌধ, মসজিদ। উপড়ে গিয়েছে শয়ে শয়ে গাছ। ফাটল ধরেছে রাস্তায়, সেতুতে। হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছে বিদ্যুতের খুঁটি, মোবাইলের টাওয়ার। বহু এলাকা যোগাযোগবিচ্ছিন্ন।নেপিদের হাসপাতালগুলিতে উপচে পড়েছে ভিড়।এই পরিস্থিতিতে ভারত সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। ১৫ টন ত্রাণসামগ্রী পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে তাঁবু, স্লিপিং ব্যাগ, কম্বল, খাবার, জল, সোলার ল্যাম্প, জেনারেটর সেট সহ অত্যাবশ্যকীয় ওষুধপত্র। শনিবার ভোরে উত্তরপ্রদেশের হিন্ডন বায়ুসেনা স্টেশন থেকে ভারতীয় বায়ুসেনার সি১৩০জে বিমান মায়ানমারের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। উৎপত্তিস্থল সেদেশের সাগাইং শহর থেকে ১৬ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে। সেই সময় কম্পন অনুভূত হয় বাংলাদেশের ঢাকা-সহ একাধিক জায়গায়। এর প্রভাব পড়ে ভারতেও। কেঁপে ওঠে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা, হাওড়া, হুগলি-সহ একাধিক জেলা ও সিকিমও। এছাড়া ভূমিকম্পের ব্যাপক প্রভাব পড়ে মায়ানমারের প্রতিবেশী থাইল্যান্ডেও। ভেঙে পড়ে একের পর এক বহুতল, ব্রিজ। যত সময় যায় শিরদাঁড়ায় কাঁপন ধরিয়ে দেওয়ার মতো ভূমিকম্পের একাধিক ভিডিও ভাইরাল হতে থাকে সোশাল মিডিয়ায়। ধীরে ধীরে জানা যায় প্রাণহানির সংখ্যা ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ। এখনও পর্যন্ত মোট ১৫ বার কেঁপেছে মায়ানমার। ১০ ঘণ্টার মধ্যে ১৪টি আফটারশক অনুভূত হয়। যার জেরে উদ্ধারকাজেও বেশ বেগ পেতে হয়। গোটা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে মায়ানমারের জুন্টা সরকার। এই কঠিন সময়ে বিভিন্ন দেশের কাছে পাশে থাকার আর্জি জানিয়েছে তারা। পাশাপাশি আজ শনিবার সরকার জানিয়েছে, ১০০২ জন প্রাণ হারিয়েছেন এই ভূমিকম্পে। আহত প্রায় ৩ হাজার। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে রয়েছেন বহু। চলছে উদ্ধারকাজ। ইতিমধ্যেই বিপর্যস্ত এলাকার হাসপাতালগুলোতের রক্তের সংকট দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত থাইল্যান্ডও। তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছে ৩০ তলা বিল্ডিং থেকে শুরু করে একের পর এক বহুতল, হোটেল। ফাটল দেখা দিয়েছে রাস্তায়।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement