বিচারপতি বর্মাকে সরানোর দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে চিঠি

IMG-20250327-WA0331

আরও বিপাকে বিচারপতি যশবন্ত বর্মা। বদলি করার পরিবর্তে এবার তাঁকে সরানোর দাবিতে সুপ্রিম কোর্টকে চিঠি দিলেন দেশের ছয় রাজ্যের বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রধানরা। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নাকে লেখা চিঠিতে গুজরাট হাই কোর্ট, এলাহাবাদ হাই কোর্ট, কর্নাটক হাই কোর্ট, কেরল হাই কোর্ট এবং লখনউয়ের বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রধানরা জানিয়েছেন, বদলি নয়, বিচারপতি বর্মাকে সব কাজ থেকে সরানো হোক। তাঁরা জানিয়েছেন, বিচারপতি বর্মাকে বদলি করা ঠিক হবে না। বরং তাঁকে সমস্ত রকম কাজ থেকে অব্যাহতি দেওয়া উচিত। বৃহস্পতিবার বিকেলে বিচারপতি খান্না তাঁদের সঙ্গে দেখাও করেন এবং তাঁদের আশ্বস্ত করেন।উল্লেখ্য, দোলের ছুটি চলাকালীন বিচারপতি বর্মার বাড়িতে আগুন লাগে। তখনই তাঁর বাড়িতে বিপুল পরিমাণ নগদ পান দমকল কর্মীরা। এরপর বিচারপতির বাড়ির কাছে রাস্তা থেকেও পাঁচশো টাকার পোড়া নোট উদ্ধার হয়। এখনও পর্যন্ত ওই অর্থের উৎস জানা যায়নি। এই ঘটনায় হইচই শুরু হওয়ার পর ২০ ও ২৪ মার্চ দুটি আলাদা বৈঠকের বিচারপতি বর্মাকে দিল্লি হাই কোর্ট থেকে এলাহাবাদ হাই কোর্টে পাঠানোর সুপারিশ করা হয়। যদিও বেঁকে বসে এলাহাবাদ হাই কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশন। তারা আগেই জানিয়ে দেয়, কোনওমতেই বিচারপতি বর্মাকে যেন এলাহাবাদ হাইকোর্টে বদলি না করা হয়। ছয় বার অ্যাসোয়িসেশনের প্রধান দেশের প্রধান বিচারপতিকে লেখা চিঠিতে জানিয়েছেন, নগদ উদ্ধারের ঘটনায় বিচারপতি বর্মাকে জবাবদিহি করতে হবে। তাঁর বিরুদ্ধে উপযুক্ত তদন্ত করা প্রয়োজন। সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়ামকে বার প্রধানেরা বিচারপতি বর্মার বদলির নির্দেশ প্রত্যাহারের অনুরোধ করেছেন। তাঁদের অনুরোধ, বিচারপতি বর্মাকে সমস্ত প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকেই অব্যাহতি দেওয়া হোক। ইতিমধ্যে তাঁকে বিচারের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছে দিল্লি হাই কোর্ট। নগদ উদ্ধারকাণ্ডের পর বিচারপতি বর্মার বদলির সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে আসতেই প্রতিবাদ করেছিল ইলাহাবাদ হাই কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশন। তাদের বক্তব্য ছিল, ‘ইলাহাবাদ হাই কোর্ট কোনও আবর্জনা ফেলার পাত্র নয়’। ২৫ মার্চ থেকে ইলাহাবাদ হাই কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশন কর্মবিরতিও পালন করছে। তাদের পাশেই দাঁড়িয়েছে বাকি পাঁচ বার অ্যাসোসিয়েশনও। একটি যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘সকল বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান ইলাহাবাদে দেখা করবেন এবং বিচারপতি বর্মার বদলির বিরোধিতায় ইলাহাবাদ বার অ্যাসোসিয়েশনের দাবির প্রতি সমর্থন জানাবেন।’’ বিচারপতি বর্মার বিরুদ্ধে অভ্যন্তরীণ তদন্তের জন্য ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্ট একটি কমিটি গঠন করেছে। তিন সদস্যের সেই কমিটিতে আছেন হিমাচল প্রদেশ, পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি এবং কেরল হাই কোর্টের এক বিচারপতি। এ বিষয়ে দিল্লি হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিকে উপাধ্যায় একটি রিপোর্ট সুপ্রিম কোর্টে জমা দিয়েছেন। গোটা প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্য সেই রিপোর্ট সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে আপলোডও করা হয়েছে।এলাহাবাদ হাই কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অনিল তিওয়ারির বক্তব্য, বিচারপতি বর্মাকে কোনও আদালতেই বদলি করা উচিত হবে না। “কোনও আদালতই আবর্জনার স্তূপ নয়।” আরও বলেন, “ভারতের প্রধান বিচারপতিকে অনুরোধ করা হয়েছে যে বিচার প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে তাঁর দিল্লিতেই থাকা উচিত।” এমনকী জনগণের আস্থা ফেরাতে অভিযুক্ত বিচারপতির সমস্ত রায় পর্যালোচনা করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি। নগদকাণ্ডে সিবিআই কিংবা ইডির তদন্তের দাবিও জানিয়েছেন এলাহাবাদ হাই কোর্টের বিচারপতিরা।এবার বার অ্যাসোয়িসেশনের প্রধানেরা প্রধান বিচারপতিকে জানিয়েছেন, নগদ উদ্ধারের ঘটনায় বিচারপতি বর্মাকে জবাবদিহি করতে হবে। তাঁর বিরুদ্ধে উপযুক্ত তদন্ত করা প্রয়োজন। এরপর বিচারপতি বর্মার বদলির নির্দেশ প্রত্যাহারের অনুরোধ জানান তাঁরা। তাঁদের অনুরোধ, বিচারপতি বর্মাকে সমস্ত প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকেই অব্যাহতি দেওয়া হোক। সব মিলিয়ে বিচারপতিকে নিয়ে উত্তেজনা বাড়ছে।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement