ওবিসি মামলায় ভুল স্বীকার মুখ্যসচিবের

IMG-20250312-WA0313

ওবিসি সার্টিফিকেট মামলায় ভুল স্বীকার করে নিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু হল? ওবিসি শংসাপত্র বাতিল মামলায় হাই কোর্টে এই প্রশ্নের মুখেই পড়েন মুখ্যসচিব।তবে শেষ পর্যন্ত ভুল স্বীকার করে নেন তিনি। আদালতকে আশ্বস্ত করে মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘ভবিষ্যতে আর হবে না!’’ হাই কোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও ওবিসি শংসাপত্র ব্যবহার করে নিয়োগপ্রক্রিয়া চালাচ্ছে রাজ্য সরকার, এমনই অভিযোগ উঠেছিল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে রাজ্যের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা হয় উচ্চ আদালতে। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি ছিল। গত শুনানিতে এই মামলায় রাজ্যের মুখ্যসচিবকে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই নির্দেশ মোতাবেক ভার্চুয়ালি আদালতে হাজিরা দিয়েছিলেন তিনি। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, হাইকোর্টের নির্দেশ অগ্রাহ্য করে সরকারের যে সব বিভাগ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে, সেই বিভাগের অফিসারদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। কী পদক্ষেপ নেওয়া হলো ২ এপ্রিলের মধ্যে মুখ্যসচিবকে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে।মুখ্যসচিবকে বিচারপতি চক্রবর্তী প্রশ্ন করেন, ‘‘আমরা আমাদের নির্দেশ স্পষ্ট করে বলেছিলাম। তার পরও তা অমান্য করে কী ভাবে নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু হল? রাজ্য বা মুখ্যসচিবের এ বিষয়ে কোন নিয়ন্ত্রণ নেই?’’ মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘গত সেপ্টেম্বরে এবং চলতি মাসেও আদালতের নির্দেশ সব দফতরকে জানানো হয়েছে। আদালতের নির্দেশ না মানার কোনও কারণই নেই। এটা একটা ভুল, সেটা স্বীকার করছি।’’ পশ্চিমবঙ্গ কোঅপারেটিভ সোসাইটির নিয়োগপ্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। অভিযোগ, ওবিসি শংসাপত্র সংক্রান্ত আদালতের নির্দেশ অমান্য করে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। এমনকি, প্যানেলও প্রকাশ করা হয়। আদালতে মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ মতো চূড়ান্ত কিছুু করা হবে না। যেখানে যা নিয়োগ চলছে, আমরা সেখানে সব স্থগিত করে দিচ্ছি। আমরা সরকারের সব ধরনের নিয়োগ বন্ধ রেখেছি। ওবিসি মামলা বিচারাধীন থাকায় সেই সংক্রান্ত নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। আদালতের নির্দেশকেই মান্য়তা দেওয়া হবে। আমাদের কোথাও ভুল হয়ে থাকলে, আমরা সেটা সংশোধন করে নেব।’’ আদালত তার পরই ওবিসি শংসাপত্র বাতিল নিয়ে পুরনো নির্দেশই স্পষ্ট করে। শুনানিতে বিচারপতি মান্থা বলেন, ‘‘২০১০ সালের আগে যাঁরা ওবিসি শংসাপত্র পেয়েছেন, তাঁদের নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনও স্থগিতাদেশ দিইনি। আদালত তার নির্দেশে তা স্পষ্ট করে বলেছিল।’’ নির্দেশের কথা উল্লেখ করে মুখ্যসচিবের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘আপনরা কেন আদালতের উপর চাপিয়ে দিচ্ছেন, যে আমাদের নির্দেশের জন্য নিয়োগপ্রক্রিয়া বন্ধ! ২০১০ সালের আগে যাঁরা ওবিসি শংসাপত্র পেয়েছেন, তাঁদের নিয়োগে তো কোনও বাধা নেই।’’ মুখ্যসচিব জানান, আদালতের নির্দেশ সব দফতরকে পাঠানো হয়েছে। তা শুনে বিচারপতি মান্থার পর্যবেক্ষণ, ‘‘আপনি (মনোজ পন্থ) সবচেয়ে বড় আধিকারিক। আপনার লোকেরাই আপনাকে মানছেন না। এটা আমাদের কাছে খারাপ লাগছে। আপনাকে আদালতে ডাকাও দুঃখজনক। আপনার কথা না শুনলে আর কার কথা শুনবে?’’ মুখ্যসচিব আদালতকে আশ্বস্ত করেন, ‘‘আমি এ বিষয়ে সতর্ক হব।’’

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement