হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে তৈরি হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।কিন্তু তারপরেও পড়শি দেশে শান্তি ফেরেনি। অশান্তির আবহে দিন কাটছে বাংলাদেশের।এই সময়কালেই ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক খানিক খারাপও হয়েছে। তবে নয়াদিল্লির সঙ্গে সম্পর্ক ভালো রাখতে চান বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। বিবিসি বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছেন তিনি। তবে ইউনূস স্বীকার করে নিয়েছেন, ভারতের সঙ্গে একটি দ্বন্দ্ব এবং ভুল বোঝাবুঝির মেঘ রয়েছে। সেই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো না থেকে উপায় নেই। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক এখনও ভালো আছে, ভবিষ্যতেও ভালো থাকবে।’ উল্লেখ্য, গত বছর অগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের জেরে বাংলাদেশে পতন হয় আওয়ামি লিগ সরকারের। শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকেই ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হয়। বিশেষ করে শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার বিষয়টি ভালো চোখে দেখেনি ঢাকা সেই সঙ্গে ভারতের মাটিতে বসে হাসিনা যেভাবে ইউনূসের সরকারকে নিশানা করেন তাতে নিজেদের অসন্তোষ প্রকাশ করে ঢাকা। বাংলাদেশের হিন্দু এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন নিয়ে ঢাকাকে সতর্ক করেছিল দিল্লি। এটা ছাড়াও সীমান্তে অনুপ্রবেশ এবং কাঁটাতার দেওয়া নিয়ে ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে একাধিক ইস্যুতে মতবিরোধ দেখা দেয়। বাংলাদেশের ভারত-বিরোধী জিগির ছাড়াও মৌলবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে বলেও অভিযোগ। তবে, এই সবের মধ্যেই বিবিসি বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা দাবি করলেন যে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক খারাপ করতে চান না। ইউনূস জানিয়েছেন, দুই দেশের মধ্যের সম্পর্কে দ্বন্দ্ব বা মেঘ দেখা দিয়েছিল। তবে, এই জন্য দুই দেশের মধ্যেকার সম্পর্কের কোনও অবনতি হয়নি। ইউনূস বলেন, ‘ দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক খুবই ভালো। আমাদের সম্পর্কের কোনও অবনতি হয়নি। আমি যেভাবে ব্যাখ্যা করে এসেছি তাতে আমাদের সম্পর্ক সবসময় ভালো থাকবে। এখনও ভালো আছে, ভবিষ্যতেও ভালো থাকবে।’ এই সঙ্গেই ইউনূস বলেন, ‘ বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক ভালো না থেকে উপায় নেই। আমাদের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ, আমাদের পরস্পরের ওপর নির্ভরশীলতা এত বেশি এবং ঐতিহাসিকভাবে, রাজনৈতিকভাবে, অর্থনৈতিকভাবে আমাদের এত ঘনিষ্ট সম্পর্ক, তা থেকে আমরা বিচ্যুত হতে পারবো না।’ দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে যে মেঘ দেখা দিয়েছিল তাও কেটে যাচ্ছে বলে বলে জানান তিনি। গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশে গণআন্দোলনের চাপে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন শেখ হাসিনা। তার পর তিনি ভারতে চলে এসেছিলেন। তাঁর প্রত্যর্পণ চেয়ে ভারত সরকারকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ। এখনও তার উত্তর দেয়নি নয়াদিল্লি। হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের ঘটনা বেড়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। ভারত একাধিক বার বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ফলে দুই দেশের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। সাক্ষাৎকারেও সে কথা মেনে নিলেন ইউনূস।