চিকেনস নেকে ২৪ ঘণ্টা নজরদারি শুরু

শিলিগুড়ি: দিল্লি বিস্ফোরণের মধ্যেই চিকেনস নেক বা শিলিগুড়ি করিডরের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ। লালকেল্লার ঘটনার ঠিক আগেই আকাশপথে চিকেনস নেকে ২৪ ঘণ্টা নজরদারি শুরু করেছিল বায়ুসেনা ও সেনাবাহিনী। সেনা সূত্রের খবর, নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিশেষ বার্তা পেয়েই চিকেনস নেকে অতিসক্রিয় হয়েছে তারা। ইতিমধ্যেই শিলিগুড়ি করিডরের কাছে কিশনগঞ্জ, চোপড়া এবং ধুবড়ির বামুনিগাঁওতে তিনটি নতুন সেনাছাউনি তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিরক্ষামন্ত্রক। গত এক মাসে করিডরের কাছে তিনটি বিশেষ অস্ত্র মহড়া হয়েছে। চিকেনস নেক রক্ষায় কামিকাজে ড্রোন সজ্জিত ‘অশনি’ প্লাটুন এবং নির্ভুল আঘাত হানার জন্য বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত ‘ভৈরব’ ব্যাটালিয়ন কাজে লাগানো হচ্ছে। 

বায়ুসেনা কর্তারা জানিয়েছেন, চিকেনস নেক রক্ষায় তাঁরা যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহারে আরও সক্রিয় হচ্ছেন। তাঁদের ভাষায়, চিকেন নেকে তৈরি হয়েছে প্রযুক্তি নির্ভর ‘প্রতিরক্ষা ছাতা’। ব্রহ্মস ক্রুজ মিসাইল রেজিমেন্টকেও আরও শক্তিশালী করা হয়েছে।

সেনা সূত্রের খবর, রবিবার থেকেই শিলিগুড়ি করিডরে আকাশপথে সবসময়ের জন্য নজরদারি শুরু হয়েছে। সেনার ত্রিশক্তি কোর ছাড়াও ব্রহ্মস্ত্র এবং গজরাজ কোর আলাদা করে নজরদারি শুরু করেছে। চিন সীমান্তেও বাড়তি নজর দেওয়া হয়েছে। করিডরের সুরক্ষায় সপ্তাহখানেক আগেই সিকিমে সাতদিনের সম্পূর্ণ প্রযুক্তি নির্ভর যুদ্ধাস্ত্রের প্রশিক্ষণ হয়েছে। পূর্ব সিকিমে হিমালয়ের ১৩৫০০ ফুট উচ্চতায় ওই মহড়ায় দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় প্রবল দুর্যোগের মধ্যেও কীভাবে প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রিত অস্ত্র শত্রুর মোকাবিলা করবে তা ঝালাই করে নেওয়া হয়। সেনা সূত্রের খবর, মহড়ায় দশটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন প্রযুক্তি নির্ভর অস্ত্র ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

চিকেনস নেক রক্ষায় যুদ্ধ মহড়া ‘পূর্ব প্রচণ্ড প্রহারে’র প্রস্তুতিও শেষ পর্যায়ে। শিলিগুড়ি করিডরের দেখভালের জন্য সেনার ইস্টার্ন কমান্ড একটি শক্তিশালী কুইক রেসপন্স টিম তৈরি করেছে। যে কোনও পরিস্থিতিতে সেই বাহিনী দুর্গম পাহাড় বা গহিন জঙ্গল যে কোনও এলাকায় গিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে সক্ষম। হাসিমারা এবং বাগডোগরা, বায়ুসেনার দুই ছাউনিই ঢেলে সাজাছে। চিকেনস নেক এলাকায় সেনার প্রশিক্ষণের জন্যও তৈরি হচ্ছে নতুন আরও চারটি কেন্দ্র। চিন সীমান্তে শ্বাপদসংকুল জঙ্গলে শত্রুদের নজরদারি বৃদ্ধির গোয়েন্দাবার্তায় সতর্ক হয়েছে সেনা। চিকেনস নেক লাগোয়া বনাঞ্চলে টহলদারির জন্যও বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে জওয়ানদের। বন্যপ্রাণীদের হাত থেকে কীভাবে বাঁচতে হবে তার জন্য বাছাই করা বনাধিকারিকরা সেনাদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের স্লিপার সেল সক্রিয় হওয়ার খবরেও চিকেনস নেক নিয়ে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। তার মোকাবিলায় চিকেনস নেকের মধ্যে এবং আশপাশের শহর ও জনবসতি এলাকাতেও সেনা গোয়েন্দারা সক্রিয় হয়েছেন। শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, মালবাজার, ধূপগুড়ি এবং ফালাকাটা শহরে বিশেষ ট্রানজিট পয়েন্ট তৈরির পরিকল্পনা শুরু করেছেন সেনাকর্তারা।

About Author

[DISPLAY_ULTIMATE_SOCIAL_ICONS]

Advertisement